ছাদে বেদানা চাষ পদ্ধতি - টবে ডালিম চাষ পদ্ধতি

আপনি কি ছাদে ডালিম বা বেদানা চাষ পদ্ধতি এ বিষয়ে জানার জন্য আর্টিকেলটি পড়া শুরু করেছেন? তাহলে আপনি সঠিক আর্টিকেলটিতেই প্রবেশ করেছেন। আজ আমি ছাদে বেদানা চাষ পদ্ধতি তথা ডালিম চাষ পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। ছাদে বেদানা চাষ পদ্ধতি এ বিষয়ে পরিষ্কার ভাবে জানতে হলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ছাদে বেদনার চাষ পদ্ধতি
বেদানা এক ধরনের গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ যা সর্বোচ্চ ৮ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এই লাল রংয়ের বেদানা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী একটি ফল। অনেকেই শখের বসে অথবা প্রয়োজনের তাগিদে টবে ডালিম চাষ করতে চান। আপনাদের সুবিধার্থে এই আর্টিকেলে খুব সহজে কিভাবে বাসার ছাদে ডালিম চাষ করবেন সে বিষয়টি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরব। আশা করি ছাদে বেদানা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারলে আপনি অনেক উপকৃত হবেন এবং দ্রুততর সময়ে নিজের বাসার ছাদেও বেদানা চাষ শুরু করতে পারবেন। চলুন তাহলে শুরু করা যাক ছাদে বেদানা চাষ পদ্ধতি নিয়ে মূল আলোচনা।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ছাদে বেদানা চাষ পদ্ধতি - টবে ডালিম চাষ পদ্ধতি

ছাদে বেদানা চাষ পদ্ধতি

রসে ভরা টসটসে বড় বড় বেদানা গুলো খেতে কার না মন চায়। বাজারে বেদনার চাহিদা যেমন বেশি ঠিক তেমনি এর দামও অনেকটাই নাগালের বাহিরে। স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ায় রোগীদের জন্য আদর্শ খাবার এই ডালিম। শুধু যে জমিতেই বেদানা চাষ করা যায় ব্যাপারটি সেরকম নয়। ইদানীং অনেকেই বসতবাড়ির আঙিনায় বা ছাদে বেদানা চাষ করতে মেতে উঠেছে। সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করলে আপনিও আপনার বাসার ছাদে বেদানা চাষ করে পাড়া-প্রতিবেশীকে চমকে দিতে পারবেন। 

এখন আমি ছাদে বেদানা চাষ পদ্ধতি এ বিষয়টি নিয়ে আর্টিকেলটি শুরু করব। বেদানা খুবই পুষ্টিকর একটি ফল, যা ভিটামিন ও খনিজ পদার্থে ভরপুর। প্রতিদিনের খাবারের মেনুতে একটি করে বেদানা রাখা প্রয়োজন। বেদানাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। তাই চিকিৎসকরা ছোট থেকেই শিশুদের বেদানা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আসুন তাহলে জেনে নিই ছাদে বেদানা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে। 

ছাদ বাগানে টবে বা ড্রামে খুব সহজেই বেদানার চাষ করা যায়। ছাদে বেদানা চারা লাগানোর জন্য ২০ ইঞ্চি ড্রাম অথবা টব জোগাড় করতে হবে। ড্রামের তলায় চার থেকে পাঁচটি ছিদ্র করে নিতে হবে যেন গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকতে না পারে। ড্রামের তলায় ছিদ্র গুলো ছোট ছোট ইটের টুকরো দিয়ে বন্ধ করে দিতে হবে। ছাদের গাছটি এমন জায়গায় রাখতে হবে যেন সেখানে পর্যাপ্ত রোদ লাগে। দোআঁশ মাটিতে গোবর সার দিয়ে তার সাথে টিএসপি ৫০ গ্রাম, পটাশ ৪০-৫০ গ্রাম এবং হাড়ের গুড়া ২৫০ গ্রাম একত্রে মিশিয়ে ড্রামে পানি দিয়ে অন্তত ১০-১২ দিন রেখে দিতে হবে। 

মাটি যখন ঝুরঝুর হয়ে যাবে তখন একটি ভালো কলমের চারা সেই ড্রামে রোপন করতে হবে। চারা রোপণের সময় গাছের গোড়া মাটি থেকে কোনভাবে আলাদা করা যাবেনা এবং চারা গাছটিকে অবশ্যই সোজাভাবে রোপন করতে হবে। প্রয়োজনে একটি সরু লাঠির সাথে গাছকে বেঁধে দিতে হবে ও গাছের গোড়ায় মাটি উঁচু করে হাত দিয়ে চেপে দিতে হবে। গাছ লাগানোর শুরুতে অল্প পানি দিতে হবে এবং গাছের গোড়ায় কোনোমতেই পানি জমতে দেওয়া যাবে না। 

বেদানার চারা রোপনের অন্তত ৪/৫ মাস পরে প্রতি এক মাস অন্তর অন্তর সরিষার পচা খৈল বেদানা গাছের গোড়ায় দিতে হবে। আর এক বছর হয়ে যাওয়ার পরে টবের মাটি পরিবর্তন করে নতুন দোআঁশ মাটি গাছের গোড়ায় দিতে হবে। তবে মাঝেমধ্যেই টবের মাটি খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে পাল্টে দেওয়া উচিত। ডালিম গাছ থেকে ভালো ফলন পাওয়ার জন্য নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে এবং প্রয়োজনে গাছের গোড়ায় জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। আশা করি আর্টিকেলের এই অংশ থেকে আপনারা ছাদে বেদানা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর ধারণা পেয়ে গেছেন। 

টবে ডালিম চাষ পদ্ধতি | বেদানা গাছ চেনার উপায়

ডালিম গাছ সাধারণত বড় হয়ে থাকে। ডালিমের চারা কিনার সময় ভালো চারা দেখে কিনবেন। বেদানার গাছ চেনার সহজ উপায় হলো এর পাতাগুলো কিছুটা ছোট হয় কিন্তু গাছ অনেক লম্বা হয়ে থাকে। বেলে দোআঁশ মাটিতে এই ডালিমের চারা লাগালে চারাটি ভাল ফলন দেয়। ডালিম গাছে প্রচুর ফুল ফল আসে সেজন্যই একটি বড় অর্থাৎ 20 ইঞ্চি মাপের ড্রাম অথবা টব সংগ্রহ করতে হবে। টবের ভেতরে চারপাশটা ছোট ছোট ছিদ্র করে নিতে হবে যেন গাছের গোড়ায় পানি জমতে না পারে। টবের তলায় ছিদ্রগুলো ছোট ছোট ইটের টুকরো দিয়ে বন্ধ করে দিতে হবে। মাটিতে গোবর, হাড়ের গুঁড়ো, টিএসপি সার, পটাশ একত্রে মিশিয়ে টবে পানি দিয়ে ১২ থেকে ১৫ দিন রেখে দিতে হবে। আবার মাটি ঝুরঝুর হয়ে গেলে মাটিকে কুপিয়ে চার পাঁচ দিন রেখে দিতে হবে।

মাটি যখন ঝুরঝুর হয়ে যাবে তখন একটি ভালো গাছের চারা গোড়াসহ সোজা করে এবং মাটি ভালো করে চাপ দিয়ে রোপন করতে হবে। চারাটি রোপন করার সময় যেন মাটির মধ্যে চারাটি থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তবে চারা গাছটির গোড়ায় মাটি খানিকটা উঁচু করে দিতে হবে। এ নিয়মে আপনি খুব সহজে টবের ভেতর ডালিম চাষ করতে পারেন। কয়েক মাস যাওয়ার পর বিশেষ করে বর্ষার শেষে অথবা শীতের শুরুতে টবের মাটি সারসহ পরিবর্তন করে দিতে হবে। সুতরাং আর্টিকেলটিতে আমি টবে ডালিম চাষ পদ্ধতি এবং ছাদে বেদানা চাষ পদ্ধতি নিয়ে বিস্তর আলোচনা করলাম আশা করি আপনি উপকৃত হয়েছেন।

ডালিম গাছে ফুল আসার সময়

ডালিম গাছে ফুল আসার সময় কখন এবং এ সময়ে  কি করা প্রয়োজন সে বিষয়টি এখন আপনাদের সামনে তুলে ধরব। যারা টবে বা বাড়ির ছাদে ফলের গাছ রোপণ করতে চান তাদের কাছে একটি আকর্ষণীয় ফলের গাছ হলো ডালিম গাছ। ডালিম বহু বর্ষজীবী, গুল্ম জাতীয়, রসালো ও মিষ্টি স্বাদযুক্ত অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি ফল। এই গাছটি থেকে বছরের পর বছর ফল পাওয়া সম্ভব। সঠিক ধারণা না থাকার কারণে টবে বা ড্রামে ডালিম চাষ করতে গিয়ে বেশিরভাগ মানুষই বিভিন্ন সমস্যায় পতিত হন। 

তার মধ্যে সবার প্রথমে যে সমস্যাটি হয় ডালিম গাছে  ফুল না আসা সমস্যা এবং ফুল এলেও সেটা ঝরে পড়ে যাওয়ার সমস্যা। ডালিম গাছের ফুল ঝরে যাওয়ার কারণ হলো, সঠিক ও স্বাস্থ্যসম্মত চারা নির্বাচন না করা। নার্সারি থেকে চারা গাছ কেনার সময় অবশ্যই সবুজ দেখে কিনবেন। সবুজ পাতা বিশিষ্ট গাছ সাধারণত মেয়ে গাছ। যখন ডালিম গাছে প্রচুর পরিমাণে ফুল আসে বিশেষ করে বর্ষার শুরুতে যে ফুলগুলো আসে প্রয়োজনে তখন আমরা একটুখানি পটাশ সার সরবরাহ করতে পারি। এতে করে গাছ পরিপূর্ণ পুষ্টি পেয়ে ফুল আসার পরিমাণ বেড়ে যাবে।

আবার ফুল আসার প্রাক্কালে কিছুটা জৈব সার গাছের গোড়ায় দিলে ফুল এবং ফল দুটোই ভালো হবে। ডালিম গাছে সারা বছরই ফুল ও ফল ধরে ; তবে বসন্তে এবং বর্ষায় ডালিম গাছে বেশি ফুল ধরে। বসন্তকালে যে ফুল হয় সে ফুল থেকে গ্রীষ্মকালে ফল পাওয়া যায়, আবার বর্ষার সময়ে আসা ফুল থেকে সাধারণত ডালিমের ফল অক্টোবর থেকে নভেম্বররে সংগ্রহ করা যায়। ফুল আসার পূর্বে সঠিক পরিচর্যা করলে  ফলনের পরিমাণ অনেক গুণ ভালো হয়। উপরের আলোচনা থেকে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন ডালিম গাছে ফুল আসার সময় কখন এবং কি করা প্রয়োজন। ছাদে বেদানা চাষ পদ্ধতি পুনরায় জেনে নেওয়ার জন্য পোষ্টের আগের অংশ দেখে নিন। 

ডালিম গাছের পরিচর্যা | বেদানা গাছের পরিচর্যা 

বন্ধুরা আপনারা ইতোমধ্যে তবে বেদানা বা ডালিম  চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। হাইব্রিড আনার বা বেদানা চাষ করলে সেখান থেকে বেশি ফল পাওয়া যায়। তবে অধিক ফল পাওয়ার জন্য ডালিম গাছের রোগ ও প্রতিকার এর ব্যাপারে বিশেষ সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। প্রায়শই ডালিমের পচন রোগ দেখা দেয়। সেজন্য অবশ্যই বেদানা গাছের পরিচর্যা এর ব্যাপারে অধিক নজর দিতে হবে। এবার চলুন আমরা কিভাবে ডালিম গাছের পরিচর্যা করতে পারি সে বিষয়টি এক নজরে জেনে ফেলি। 

১) সার প্রয়োগ: ডালিমের চারা রোপনের পূর্বে গর্তে যেমন সার দিতে হবে তেমনি প্রতিবছর গাছের গোড়ার মাটি আলগা করে সেখানে নির্দিষ্ট মাত্রায় সার প্রয়োগ করতে হবে। এতে করে ফলন যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি গাছের স্বাস্থ্যও অটুট থাকবে। প্রতিবছর কম্পোস্ট সার গুঁড়ো ৫০০ গ্রাম, ইউরিয়া ১৫০ গ্রাম, টিএসপি ১০০ গ্রাম, এমওপি ১০০ গ্রাম, জিপসাম ৭০ গ্রাম, গোবর সার ১০ কেজি, মিউরেট অফ পটাশ ১.৫ কেজি অন্তত দুইবার প্রয়োগ করতে হবে। 

২) ডালিম গাছের ডাল ছাটাই ও আগাছা দমন: ডালিম গাছের ডাল ছাটাই করে ছোট করতে হবে এবং আগাছা জন্ম নিলে তা কেটে ফেলতে হবে। গোড়ায় যেন কোন ধরনের আগাছা না জন্মে সে ব্যাপারটি বিশেষভাবে লক্ষ্য করতে হবে। কারণ ডালিম গাছ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না রাখলে বিভিন্ন রোগ জীবাণুর আক্রমণে ডালিম গাছের ফুল ঝরে যেতে পারে। ডালিম গাছের পুরাতন ডাল ছাঁটাই করলে সেখানে নতুন ডাল জন্মলাভ করে আর সেই ডালে নতুন নতুন ফুল আসে। ডালিম গাছের শিকড় থেকে বের হওয়া ছোট ডালগুলোও কেটে দিতে হবে। 

৩) সেচ প্রদান ও পানি নিষ্কাশন: ফল দেওয়া অবস্থায় নিয়মিত আনার বা ডালিম গাছের গোড়ায় পানি দিতে হবে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে গাছের গোড়া অতি দ্রুত শুকিয়ে যায়। রোদের প্রচন্ড তাপ থেকে যাতে গাছ ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় পানি সেচ দিতে হবে। বেদনা গাছের গোড়ায় অতিরিক্ত পানি জমলে সেটি গাছের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তবে পৌষ থেকে বৈশাখ পর্যন্ত সময়ে গাছের বিশেষ যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি সেচ প্রদান সাময়িক বন্ধ রাখতে হবে। 

৪) ডালিম গাছের রোগ ও প্রতিকার: ডালিম গাছে ফল ছিদ্রকারী পোকা আক্রমণ করলে ডালিমের ফল ব্যাগ দিয়ে মুড়িয়ে দিতে হবে। এছাড়াও এক্ষেত্রে ম্যালাথিওন নামক কীটনাশক ১৫ দিন পরপর স্প্রে করলে পোকাগুলো ধীরে ধীরে মরে যাবে। আর কান্ড ছিদ্রকারী পোকার ক্ষেত্রে গর্তে তুলোর সাহায্যে কেরোসিন দিয়ে ছিদ্র বন্ধ করলে ক্ষতিকর পোকা মারা যাবে। ডালিমের পচন রোগ এর ফলে আক্রমণ করতে পারে। সেজন্য রোগাক্রান্ত কাণ্ড বা ফল কেটে ফেলে ২ গ্রাম হারে মেনকোজেব এবং ১ গ্রাম হারে কার্বান্ডিজম ছত্রাক নাশক পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর গোটা গাছে স্প্রে করতে হবে। এছাড়া বোরিক অ্যাসিড মাটিতে মেশালে ডালিমের ফল ফেটে যাওয়া সহ অন্যান্য সমস্যা দূর হয়।

সুতরাং পোস্টের এ অংশ থেকে আপনারা ডালিম গাছের পরিচর্যায় করণীয় কি সে বিষয়গুলো পূর্ণাঙ্গভাবে জানতে পারলেন। সেই সাথে ডালিম গাছের রোগ ও প্রতিকার মূলক ব্যবস্থা সম্পর্কেও আপনারা দারুন অবগত হলেন। ছাদে বেদানা চাষ পদ্ধতি ও টবে ডালিম চাষ পদ্ধতি পুনরায় জেনে নেওয়ার জন্য পোষ্টের আগের অংশটি পড়ে ফেলুন। 

ডালিম গাছের কলম পদ্ধতি

ডালিম গাছে কলম করার সঠিক সময় হলো বর্ষাকাল।  তাই আপনি বেদানা গাছে কলম করার জন্য বর্ষার আগের একটি নির্দিষ্ট সময় নির্বাচন করতে পারেন। কলম করার জন্য বিশেষ কিছু প্রয়োজন হয় না তাই খুব সহজেই কলম করা সম্ভব কলম করার জন্য যা যা প্রয়োজন যেমন: দড়ি, ধারালো ছুরি, পলিথিন, মাটির পেস্ট। কলম করার জন্য গাছ থেকে আঙ্গুলের মত মোটা ডালকে বেছে নিতে হবে। এবার ডালটির গোড়া থেকে কিছুটা দূরে দুই থেকে আড়াই ইঞ্চি ছুরি দিয়ে কিছুটা বাকল তুলে নিতে হবে। 

বাকলটি তোলার সময় সাবধানে তুলতে হবে। ডালটির যেন কোনো আঘাত না লাগে এ ব্যাপারটি লক্ষ্য করতে হবে। সম্পূর্ণ বাকলটি তোলা হয়ে যাবার পর ডালটির সঙ্গে লেগে থাকা পিচ্ছিল পদার্থটি ছুরির সাহায্যে ঘুষে দিয়ে তুলে নিতে হবে, ভালোভাবে পরিষ্কার না করলে শিকড় জন্মানো বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এরপর মাটির পেস্ট, দড়ি এবং পলিথিনের প্রয়োজন হবে, এবার মাটির মিশ্রণের সঙ্গে পচা গোবর দিতে হবে। মাটির সাথে সারগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে মাটি প্রস্তুত করতে হবে।

মাটি সমৃদ্ধ পলিথিনটি ডালের কাটা জায়গায় ভালোভাবে বসিয়ে দিয়ে পলিথিনটি ভালো করে দড়ি দিয়ে বেঁধে দিতে হবে। সাধারণত ডালিম গাছের কলমে নতুন শিকড় আসতে সময় লাগবে দুই থেকে আড়াই মাস। কলম করার দুই থেকে আড়াই মাস পর গাছ থেকে কলম করা ডালটি কেটে নিতে হবপ। অতিরিক্ত ডালপালা থাকলে সেগুলোও কেটে ফেলবেন। তারপরে কলমটি পানির ভিতরে ভিজিয়ে রাখতে হবে। 

একটি পলিথিনের ব্যাগে পচা গবরের মাটি মধ্যে কলমের চারাটি সুন্দর করে সোজা ভাবে মাটি দিয়ে ভরাট করে নিতে হবে। এভাবে চারাটি লাগানোর পরে ১৫ দিন গাছটিকে ছায়ার মধ্যে রাখতে হবে, কারণ অতিরিক্ত রোদের তাপে গাছটি শুকিয়ে যেতে পারে। কলমটিতে ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে নতুন পাতা বের হতে দেখা যাবে। এভাবে এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে কলমের চারাটি টবে বা মাটিতে লাগানোর উপযোগী হয়ে যাবে। আর্টিকেলটি এতদূর পর্যন্ত পড়ে আপনি নিশ্চয়ই ছাদে বেদানা চাষ পদ্ধতি ও ডালিম গাছের কলম পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

উপসংহার - ছাদে বেদানা চাষ পদ্ধতি - টবে ডালিম চাষ পদ্ধতি 

পরিশেষে এ কথা বলে শেষ করবো যে আমি এই আর্টিকেলে আপনাদের সুবিধার্থে ছাদে বেদানা চাষ পদ্ধতি সহ বেদানার চাষ সংক্রান্ত আরো কিছু দরকারী তথ্য উপস্থাপনা করেছি। আশা করি আপনারা পোস্টটি পড়ে যথেষ্ট উপকৃত হয়েছেন। এখন চাইলেই আপনারা টবে ডালিম চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনার বাসার ছাদে অথবা যে কোন ফাঁকা জায়গায় ডালিম গাছ লাগাতে পারবেন। এই পোস্ট সংক্রান্ত কোন জিজ্ঞাসা থাকলে নিচে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আর অন্যদের বেদানা বা ডালিম চাষ পদ্ধতি জানাতে চাইলে তাদের মাঝে এই পোস্টটি শেয়ার করে দিন। এছাড়াও কৃষি বিষয়ক নিত্যনতুন পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। 

FAQs (প্রশ্নোত্তর)

প্রশ্ন: ডালিম গাছে ফুল কখন আসে? 
উত্তর: প্রতিবছর বসন্ত এবং বর্ষার সময়ে ডালিম গাছে অধিক ফুল ধরতে দেখা যায়। তবে সারা বছরই ডালিমের ফুল থেকে ফল উৎপন্ন হতে থাকে। 

প্রশ্ন: বেদানা কখন খেলে ভালো হয়? 
উত্তর: সন্ধ্যা বা বিকালের দিকে বেদানা খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। তবে সকালে খাওয়ার পরও বেদানা খাওয়া যেতে পারে। 

প্রশ্ন: গাছে ডালিম পচে যাওয়ার কারণ কি? 
উত্তর: ডালিম গাছে ফুল ফোটা ও ফল ধরার সময় এসপারজিলাস রটের সংক্রমণের কারণে ডালিম গাছের ফলে পচন ধরতে পারে। আবার ক্ষতিকর ছত্রাকের কারণেও ডালিম পচে যেতে দেখা যায়। 

প্রশ্ন: ডালিমের পাতা কি বিষাক্ত? 
উত্তর: ডালিমের পাতায় অনেক ঔষধি গুনাগুন রয়েছে। ডালিমের পাতা সিদ্ধ করে বিভিন্ন রোগ সারাতে ব্যবহার করা যায়। এমনকি ডালিমের পাতা খাওয়াও যায়। তাই ডালিমের পাতা বিষাক্ত হওয়ার প্রশ্নই আসে না। 

প্রশ্ন: রোজ বেদানা খেলে কি হয়? 
উত্তর: রোজ বেদানা খাওয়া গেলে এটি আমাদের দেহে কোলেস্টেরল ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখে। ডালিমে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও খনিজ লবণ থাকার কারণে এটি যে কোন রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
এই পোস্টে কমেন্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

অনির্বাণ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url