পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় দোয়া - মাসিকের ব্যথায় করণীয়

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় দোয়া সম্পর্কে অনেকেই জানতে ইচ্ছুক। যেহেতু পিরিয়ড চলাকালীন মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয় তাই সকলেরই পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় দোয়া সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। এই আর্টিকেলে পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় দোয়া, মাসিকের ব্যথায় করণীয় সহ আরো বেশ কিছু বিষয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হবে।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় দোয়া

তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় দোয়া সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়তে হবে। পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায় সম্পর্কে শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ একটি ধারনা অর্জন করতে পারবেন। 

সূচিপত্রঃ পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় দোয়া - মাসিকের ব্যাথা কমানোর দোয়া - মাসিকের ব্যথায় করণীয়

পিরিয়ডের ব্যথা হওয়ার কারণ | মাসিকের সময় পেটে ব্যথার কারণ 

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় দোয়া সম্পর্কে জেনে নেওয়ার পূর্বে মাসিকের ব্যথার কারণ সমূহ কি কি এ বিষয়টি জেনে রাখা জরুরি। গবেষণা থেকে জানাজায় ঋতুস্রাব চলাকালীন ৫০% নারীরই প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হয়। খুব কম নারীই আছেন যাদের একবারও পেট ব্যথা অনুভূত হয়নি। যেকোনো শারীরিক সমস্যার কারণ জানা থাকলে পূর্ব থেকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সহজ হয়। মহিলাদের মাসিকের সময় ব্যথা অনুভূত হওয়া একটি সাধারণ ঘটনা। তবে চলুন মাসিকের ব্যথা হওয়ার কারণগুলো এবার পয়েন্ট আকারে জেনে ফেলি। 

  • প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন নামক এক ধরনের কেমিক্যাল এর আধিক্যের কারণে অধিক পরিমাণে মাসিক বা পিরিয়ডের ব্যথা অনুভূত হয়। বিখ্যাত ডাঃ ভিনসেন্ট বলেন, "মাসিকের সময় যে ব্যথা বা ফোলা ভাব তৈরি হয় তাতে ভূমিকা রাখে প্রোস্টাগ্লান্ডিনস।" প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন এটি জরায়ুর পেশীকে সংকুচিত করে যারা ওতে এক ধরনের প্রদাহ সৃষ্টি করে।
  • জরায়ুতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে মাসিকের সময় পেটে অত্যাধিক ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এটি ক্ল্যামাইডিয়া বা গনোরিয়ার মাধ্যমে সৃষ্টি হতে পারে।
  • জরায়ুর অভ্যতার এ মায়োমেটরিয়াম নামক জায়গায় বৃহদাকার ফাইব্রয়েড তৈরি হলে পিরিয়ডের ব্যথা অনুভূত হয়।
  • সারভাইকাল স্টোনেসিস অর্থাৎ যোনিপথ বন্ধ হয়ে বা সাময়িক বন্ধ থাকার কারণে ঋতুস্রাব চলাকালীন ব্যথা তীব্রতর হয়।
  • অ্যাডোনোমায়োসিস এর দরুণ জরায়ু ফুলে ওঠতে পারে। এক্ষেত্রেও পিরিয়ডের ব্যথা হয়ে থাকে। পোস্টের পরবর্তী অংশে আমরা আপনাদের মাসিকের ব্যাথায় করণীয় গুলো সম্পর্কে জানাবো। 

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় | মাসিকের ব্যথা কমানোর উপায় 

পিরিয়ড হলো মেয়েদের প্রতি মাসে চলমান একটি  স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয়  প্রক্রিয়া। বয়সন্ধিকাল থেকে অন্তত ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত নারীদের দেহে এ প্রক্রিয়া চলতে থাকে। প্রতি মাসের একটি নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত মেয়েদের পিরিয়ড হয়ে থাকে। এখন আমরা অনেকেই পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় দোয়া সম্পর্কে জানতে চাই। কারণ পিরিয়ডের সময় প্রচন্ড পরিমাণে তলপেট ব্যথা করে যা সহ্য করা অনেকেটাই কষ্টকর হয়ে পড়ে। অনেকের ক্ষেত্রে এই ব্যথা একদম অসহনীয় পর্যায়ে চলে যায়। আমরা এখন পিরিয়ড বা মাসিকের ব্যথা কমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে জানব।

আরো পড়ুনঃ কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম এবং হাদিস

১) আদা চা সেবন করা - আমরা সকলেই কমবেশি জানি যে আদা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। আদার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর উপাদান যা আমাদের দেহের জন্য দারুণ উপকারী। আপনি যদি পিরিয়ডের প্রচণ্ড ব্যথায় ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিত আদা চা খেতে পারেন এটি আপনাকে পিরিয়ডের ব্যথা থেকে অনেকটাই প্রশান্তি এনে দেবে। এছাড়াও আদার রস মধু সহযোগে খেলে এটি মাসিকের ব্যথা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

২) ক্যামোমাইল সেবন করা -  মাসিকের ব্যথায় করণীয় হিসাবে ক্যামোমাইল সেবন করা যেতে পারে। যেহেতু পিরিয়ডের সময় সকলেই প্রচন্ড পরিমাণে পেটের ব্যথায় ভুগে থাকি তাই এ সময় যদি ক্যামোমাইল সেবন করতে পারি তাহলে এটি আমাদের ব্যথা থেকে অনেকটাই পরিত্রাণ এনে দেবে। কারণ এই চায়ের মধ্যে রয়েছে এন্টি ইনফ্লেমেন্টারি উপাদান। এই উপাদান আমাদের পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

৩) হট ব্যাগ ব্যবহার করা - পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় হিসেবে হট ব্যাগ ব্যবহার করা একটি আদর্শ টোটকা হতে পারে।  আপনি যদি অতিরিক্ত ব্যথায় ভুগে থাকেন তাহলে হট ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। কারণ পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে হটব্যাগ অর্থাৎ গরম পানির সেক বেশ কার্যকর। সাধারণত এটিকে প্রাকৃতিক উপায়ে ব্যথা কমানোর অন্যতম একটি কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

৪) ওষুধ ব্যবহার করা - তাৎক্ষণিকভাবে মাসিক বা পিরিয়ডের ব্যথা থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে সবচেয়ে কার্যকর হলো ঔষধ সেবন করা। সাধারণত আমাদের যেকোনো ধরনের ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল কার্যকরী ভূমিকা রাখে তবে পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে এই ওষুধ তেমনভাবে কাজ করে না। তবে আপনি চিকিৎসকের সঠিক পরামর্শ অনুযায়ী পেইন কিলার খেতে পারেন।

৫) রিল্যাক্স ও গরম পানি দিয়ে গোসল করা: পিরিয়ডের ব্যথা থেকে মুক্তি লাভ করার জন্য সর্বপ্রথম দুশ্চিন্তা মুক্ত তথা মানসিক চাপ মুক্ত থাকতে হবে। মানসিক চিন্তামুক্ত থাকলে এটি আপনাকে রিলাক্স হতে সহায়তা করবে। এছাড়াও হালকা গরম পানিতে গোসল করলে পিরিয়ডের ব্যথা অনেকটাই কমিয়ে ফেলা সম্ভব। 

সুতরাং আপনারা এই অংশ থেকে মাসিকের পেট ব্যাথা কমানোর উপায় গুলো জেনে নিলেন। এই প্রতিটি পদ্ধতি যদি আপনি পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে যথাযথভাবে অনুসরণ করেন তবে খুব সহজেই পিরিয়ডের ব্যথা থেকে সাময়িক মুক্তি লাভ করতে পারবেন। কারণ এই ব্যথা হলো স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার অংশ, যা কখনোই দীর্ঘমেয়াদী ভাবে নির্মূল করা সম্ভব নয়। কেবল সঠিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাই মাসিকের ব্যথার বিরুদ্ধে একমাত্র টোটকা হিসেবে কাজ করে।

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর দোয়া | মাসিকের পেট ব্যথা কমানোর দোয়া 

সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ব্যথার সমস্যায় পড়ে থাকি। যদি আপনি ইসলাম ধর্মাবলম্বী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জেনে রাখা উচিত যে ইসলামে এমন কোন বিষয় নেই যার নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। আমাদের প্রয়োজনীয় সকল কাজের পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা এখানে দেওয়া হয়েছে। দৈনন্দিন জীবনে আমরা বিভিন্ন ধরনের ব্যথার সমস্যায় ভুগে থাকি। যে সকল নারীরা পিরিয়ডের নিদারুন ব্যথার সমস্যায় ভোগে তারা পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় দোয়া সম্পর্কে জানতে চায়

আপনি যদি আপনার শরীরে কোন জায়গায় ব্যথা অনুভব করেন তাহলে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর শেখানো কিছু দোয়া রয়েছে। এই দোয়াগুলো পড়লে খুব সহজেই আমরা শরীরের যেকোনো ব্যাথা থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারব। শরীরের যেখানে ব্যথা হবে সেখানে হাত রেখে সাতবার এই দোয়াটি পড়তে হবে। পিরিয়ডের ব্যথার বাংলা দোয়াটি হলো নিম্নরূপ:

অর্থ - আল্লাহর নামে আমি আল্লাহর অসীম সম্মান ও তাঁর বিশাল ক্ষমতার উসিলায় আমার অনুভূত এই ব্যথার ক্ষতি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক দোয়া | পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায়

আপনারা ইতোমধ্যে পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় দোয়া সম্পর্কে জেনেছেন। মাসিকের সময় মেয়েদের প্রচন্ড পরিমাণে পেটব্যথা থেকে শুরু করে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এ সময় আমরা যদি পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় দোয়া পাঠ করি তবে মহান আল্লাহ  আমাদের এই ব্যথা থেকে মুক্তি দেবে ইনশাআল্লাহ। সে জন্য আপনাকে কিছু দোয়া এবং আমল করার পদ্ধতি জেনে নিতে হবে। চলুন এখন পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক দোয়া জেনে নেওয়া যাক।

বাংলায় দোয়াটি:- হে আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ, যিনি আসমানে রয়েছেন। আপনার নাম সম্মানিত, আসমান-জমিনে আপনার কর্তৃত্ব, আসমানে যেমন আপনার রহমত তেমনি জমিনেও বর্ষণ করুন। আমাদের পাপ ও গুনাহ মার্জনা করুন। আপনি সুস্থ-সৎদের প্রতিপালক, আপনার বিপুল রহমত থেকে রহমত বর্ষণ করুন। এই ব্যথা-যন্ত্রণায় আরোগ্য দান করুন। {আবু দাউদঃ ৩৮৯২, নাসায়ীঃ ১০৮৭৬}

আরও পড়ুন: শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

মাসিকের পেট ব্যাথা কমানোর দোয়া হিসাবে এক গ্লাস পানি নিয়ে একবার দরুদে ইব্রাহিম পাঠ করতে হবে। অতঃপর আল্লাহর গুণবাচক নাম "আল-আজীমু" সাতবার পাঠ করে তিনবার পানিতে ফু দিন। অতঃপর বিসমিল্লাহ বলে সেই পানি পান করুন। এভাবে আমল করলে ভালো ফলাফল পাবেন। এছাড়াও মহান আল্লাহর একটি গুণবাচক নাম "ইয়া মুতায়ালী" ১২১ বার পাঠ করে পানিতে ফু দিয়ে পান করুন। এই আমলটি করলেও দ্রুততর সময়ে মাসিকের তলপেট ব্যথা দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। 

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় | মাসিকের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় 

ইসলামে প্রতিটি সমস্যার একটি সুনির্দিষ্ট সমাধান রয়েছে। আমরা যদি সঠিকভাবে এই উপায় গুলো অবলম্বন করতে পারি তাহলে খুব সহজেই সমস্যার সমাধান করতে পারব।পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় দোয়া সম্পর্কে ইতিমধ্যেই আলোচনা করা হয়েছে। তবে আমরা পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় তেমনভাবে কেউ জানিনা। মাসিকের সময় পেটে ব্যাথা হলে করণীয় 

পিরিয়ডের সময় বেশ কিছু সমস্যা দেখা যায়। সাধারণত এই সময় মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। প্রচন্ড পরিমাণে মাথা ব্যথা হয়, পেট ব্যথা হয়, কোমর ব্যথা, বমি বমি ভাব সহ মাথা ব্যথা এই সমস্যাগুলো দেখা দেই। পিরিয়ড এর ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় উল্লেখ করা হলো। মাসিকের ব্যথায় করণীয় ঘরোয়া পদ্ধতি সমূহ এবার এক নজরে দেখে নিন। 

১) পেঁপে খেতে পারেন - পেঁপের মধ্যে অনেক গুনাগুন রয়েছে। পেঁপে খেলে এটি পিরিয়ডের ব্যথাকে অনেকটাই কমাতে সক্ষম। আপনি যদি পিরিয়ডের সময় প্রচন্ড ব্যথার অনুভব করেন এবং এই সময় যদি কাঁচা পেঁপে খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার ব্যথা কমাতে দ্রুত গতিতে কাজ করবে।

২) নিয়মিত শরীর চর্চা - পিরিয়ডের ব্যথার কারণে যেখানে নড়াচড়া করা কঠিন সেখানে শরীরচর্চার কথা শুনে নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন? তবে পিরিয়ডের দিনগুলো কিছুটা আরামদায়ক কাটাতে চাইলে কিছু হালকা ব্যায়াম যেমন: স্ট্রেচিং, যোগ ব্যায়াম ইত্যাদি হতে পারে দারুন কার্যকরী। 

৩) গরম পানির সেঁক দিন - পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে হলে আপনাকে গরম পানির সেক দিতে হবে। গরম পানি পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখে। বাজারে বেশ কিছু ব্যাগ কিনে পাওয়া যায় যেগুলোর মধ্যে গরম পানি ঢুকিয়ে ব্যাথা স্থানে লাগালে ব্যথা আগের তুলনায় অনেকটাই কমে যাবে।

৪) এলোভেরার রস - কমবেশি আমরা সকলেই এলোভেরা চিনি। আমাদের আশেপাশেই এলোভেরা গাছ পাওয়া যায়। অ্যালোভেরার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে এই অ্যালোভেরা এগুলোর মধ্যে পিরিয়ডের ব্যথা অন্যতম। যখন আপনার পিরিয়ডের ব্যথা শুরু হবে তখন এই উপাদানটি মধুসহ পান করুন।

৫) এসেন্সিয়াল ওয়েল দিয়ে শরীর মালিশ: এসেনশিয়াল অয়েল যে শুধু রূপচর্চার কাজে ব্যবহৃত হয় ব্যাপারটি তেমন নয়। মাসিকের ব্যথায় করণীয় হিসাবে পিঠ, কোমর এমনকি সমস্ত শরীরে রোজমেরি, ল্যাভেন্ডার, রোজ হিপ, পেপারমিন্ট অয়েল মালিশ করা যেতে পারে। মাত্র দুই  তিন ফোঁটা মালিশ করলেই দেহে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পেয়ে পিরিয়ড ক্রামস নিমিষেই কমিয়ে দেবে। 

৬) পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান - শরীরে যদি পানি শূন্যতা দেখা দেয় তাহলে আমাদের পিরিয়ডের ব্যথা আরো বেশি বেড়ে যায়। তাই শরীরের পানি শূন্যতা দূর করার জন্য আমাদেরকে বিশেষ করে পিরিয়ডের সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। আর পানি জাতীয় যে সকল খাবার রয়েছে সেগুলো বেশি করে খেতে হবে।

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঔষধ | পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ট্যাবলেট 

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় দোয়া সম্পর্কে তো আপনারা জেনেছেন। পিরিয়ডের ব্যথা অস্বাভাবিক পর্যায়ে চলে গেলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। পিরিয়ডের ক্রাম্পস কয়েকটা দিন শরীরকে বেশ দুর্বল করে তোলে। এ সময় নিয়মতান্ত্রিকভাবে জীবন যাপন করা, পরিমিত পরিমাণ ঘুমানো এবং অধিক পরিমাণে ভিটামিনযুক্ত ফল ও শাকসবজি খাওয়ার বিকল্প নেই। তীব্র তলপেট ব্যথায় অতিষ্ঠ হয়ে অনেকেই  পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঔষধের নাম জানতে চেয়ে থাকেন। "আইবুপ্রোফেন" নামক পিরিয়ডের ব্যথার মেডিসিনটি দ্রুততর সময়ে মাসিকের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। 

এই ঔষধ সেবনের ২০-৩০ মিনিটের মধ্যেই ব্যথা কমতে শুরু করে। আইবুপ্রোফেন 400 মি:গ্রা এর ঔষধটি ভরা পেটে দিনে ৩-৪ বার সেবন করতে হবে। তবে ব্যথা কমানোর জন্য যাদের বয়স অল্প তারা চাইলে ৫০০ বা ১০০ মি:গ্রা এর প্যারাসিটামল খেতে পারেন। তীব্রতর ব্যথা অনুভূত হলে আইবুপ্রোফেন এবং প্যারাসিটামল একত্রে সেবন করা যেতে পারে। সঠিক পরামর্শের জন্য ভালো মানের গাইনী ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। সুতরাং মাসিকের ব্যথার ঔষধের নাম আপনারা পোষ্টের এই অংশটি থেকে জেনে গেলেন। পিরিয়ডের ব্যথার প্যাটার্ন পরিবর্তিত হতে থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন। 

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর খাবার 

বন্ধুরা আপনারা ইতোমধ্যে পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় দোয়া সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা পেয়েছেন। এমন কিছু খাবার রয়েছে যা আপনার পিরিয়ডের সময়ে ব্যথা কমিয়ে আপনাকে কিছুটা স্বস্তি দেবে এবং শরীরকে প্রাণবন্ত রাখবে। ফাইবার ও ভিটামিনসমৃদ্ধ এর সকল খাবার আপনাকে ফিট রেখে শরীরের ক্ষয় রোধ করবে। সব সময় খাদ্য তালিকায় স্বাস্থ্যসম্মত খাবার সংযুক্ত করতে হবে। চলুন সে সকল খাবারের একটি তালিকা দেখে ফেলি।

  • তিল 
  • কলা
  • ব্রকলি 
  • পালং শাক 
  • ক্যামো মাইল চা 
  • আনারস 
  • আদা চা 
  • তেতুল 
  • গাজর 
  • সবুজ চা 
  • কাজু ও পেস্তা বাদাম
  • অ্যালোভেরা  
  • ডার্ক চকলেট 
  • দারচিনি গুড়া 
  • অ্যাপেল সিডার ভিনেগার 
  • কমলালেবু 
স্বাস্থ্য গবেষকদের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে  এ সকল খাবার মাসিকের ব্যথার বিরুদ্ধে দারুন প্রতিরোধ করে তোলে। এ সকল খাবার গ্রহণের সময় অবশ্যই ধুমপান পরিহার করতে হবে  ও ক্যাফেইন জাতীয় খাবার পরিত্যাগ করতে হবে। সেই সাথে অধিক তেল মসলাযুক্ত খাবার যেগুলো ফ্যাট সৃষ্টি করে সেগুলো গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সুতরাং মাসিকের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় আপনারা জেনে ফেললেন। অন্যদিকে মাসিকের ব্যথা কমানোর দোয়া যদি এখনো না জেনে থাকেন তবে পোস্টের আগের অংশ পুনরায় পড়ুন।

আমাদের শেষ কথাঃ পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় দোয়া

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে মাসিকের ব্যথায় করণীয়, পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায়, পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর দোয়া, পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু মেয়েদের এটি একটি নিয়মিত ঘটনা তাই সব মেয়েদেরই এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। আর সবসময় মহান আল্লাহ তায়ালার ইবাদত বন্দেগির মধ্যে থাকা উত্তম, এতে করে শরীরের যেকোনো ব্যথা দূর হয়ে যাবে। আশা করি এই পোষ্টের তথ্যগুলো থেকে মাসিকের ব্যথায় করণীয় সকল কর্মপদ্ধতি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্য সমৃদ্ধ স্বাস্থ্য বিষয়ক আর্টিকেল আরও পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

FAQs (মাসিক নিয়ে সাধারণ প্রশ্নোত্তর)

প্রশ্ন: পিরিয়ডের ব্যথা কতদিন থাকে?
উত্তর:
 পিরিয়ডের ব্যথা সাধারণত ৪৮ থেকে ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ব্যক্তি বিশেষে অনেকের ব্যাথার তীব্রতা কয়েকদিন পর্যন্ত অনুভূত হতে দেখা যায়।

প্রশ্ন: গরম পানি খেলে কি মাসিকের ব্যথা কমে?
উত্তর: গরম পানি পেটে গেলে এক ধরনের আলোড়ন সৃষ্টি করে যা পেটের থাকা মাসিকের ক্রাম্পকে কিছুটা হলেও নিশ্চিত করে। ফলে ব্যাথা থেকে সাময়িক স্বস্তি পাওয়া যায়। 

প্রশ্ন: পিরিয়ডের ব্যথা কতটা ক্ষতিকর? 
উত্তর: পিরিয়ডের ব্যথা অনেক সময় পিঠ, ঘাড়, উরুসহ সমস্ত স্থানে ছড়িয়ে পড়তে পারে। অত্যাধিক ব্যাথার কারণে শরীরে অন্যান্য রোগ জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে। তাই পিরিয়ডের ব্যথা মোটেও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।

প্রশ্ন: পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর জন্য কি করা উচিত? 
উত্তর: পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর জন্য নিয়মতান্ত্রিক জীবযাপন, সুষম খাবার গ্রহণ এবং ব্যায়াম করা উচিত। এছাড়াও ঘরোয়া পদ্ধতি মেনে বিভিন্ন টোটকা অবলম্বন করলে মাসিকের ব্যথা কমানো যায়। 

প্রশ্ন: পিরিয়ডের ব্যথা স্বাভাবিক কি?
উত্তর: পিরিয়ডের ব্যথা একটি স্বাভাবিক ঘটনা। তবে এর ফলে তীব্র অস্বস্তি দেখা দেয়। প্রয়োজনে পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ওষুধ সেবন করতে হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
এই পোস্টে কমেন্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

অনির্বাণ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url