কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

সকলেরই কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ধারণা রাখা জরুরী। কমবেশি সবাই হয়তো কালোজিরার উপকারিতার কথা শুনে থাকবেন। কিন্তু কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত কয়জনই বা জানে। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আজকের এই আর্টিকেলে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সমূহ সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করব।
কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
কালোজিরার বিভিন্ন রকম গুনাগুনের কারণে একে সর্ব রোগের মহৌষধ বলা হয়। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ইউনানী, ভেষজ ও প্রাকৃতিক চিকিৎসার উপাদান হিসেবে কালোজিরা বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। আপনারা যদি নির্দিষ্ট ভাবে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম অনুসরণ করে কালোজিরা খান তবে সেটি দেহের জন্য অনেক উপকারী ভূমিকা পালন করবে। আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনারা কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম সহ কালোজিরার যাবতীয় উপকারী গুনাগুন বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন। অতএব দেরি না করে এখনই পোস্টটি পড়ে ফেলুন। 

পোস্ট সূচিপত্র - কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম জানুন 

কালোজিরার পুষ্টি গুনাগুন ও উপাদান 

কালোজিরার ভেতর প্রায় ১০০ টিরও বেশি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তার মধ্যে আমাদের দেহের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক উপাদানই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কালোজিরাতে বিদ্যমান। কালোজিরার মূল উপাদানগুলোর প্রায় ৩৮ শতাংশ হচ্ছে শর্করা, ২১ শতাংশ আমিষ, ৩৫% তেল চর্বি এবং বাকিটা ভিটামিন ও খনিজ লবণে ভরপুর। তবে চলুন ১০০ গ্রাম কালোজিরায় কি কি উপাদান থাকে তা এক নজরে জেনে ফেলি। 

  • ভিটামিন বি১ (১৫ মাইক্রোগ্রাম)
  • ফোলাসিন (৬১০ আইউ)
  • ফসফরাস (৫.২৬ মিলিগ্রাম)
  • জিংক (৬০ মাইক্রোগ্রাম)
  • প্রোটিন (২০৮ মাইক্রোগ্রাম)
  • ক্যালসিয়াম (১.৮৫ মাইক্রোগ্রাম)
  • আয়রন (১০৫ মাইক্রোগ্রাম)
  • কপার (১৮ মাইক্রোগ্রাম)
  • নিয়াসিন (৫৭ মাইক্রোগ্রাম)
  • অ্যামিনো অ্যাসিড
  • স্যাপোনিন
  • নাইজেলোন
  • থাইমোকিনোন
  • স্ফটিকল নাইজেলোন
  • ক্রুড ফাইবার

কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম সমূহ

কালোজিরা খাওয়ার নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে, কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নেওয়ার পূর্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিভাবে কালোজিরা কিভাবে খাবেন সে নিয়মগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।
১) ওজন কমাতে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম: কালোজিরা খেলে কি ওজন কমে? এই প্রশ্নটি প্রায়ই জিজ্ঞাসা করা হয়ে থাকে। একটি নির্দিষ্ট নিয়মে কালোজিরা খেলে আপনার দেহের অতিরিক্ত ওজন আপনি কমাতে পারবেন। সেজন্য প্রত্যেকদিন ৮-১০ টি কালোজিরার বীজ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে বীজগুলো পানিসহ লেবুর রস মিশিয়ে খেয়ে ফেলুন। একইভাবে আপনি গরম পানির সাথেও কালোজিরার বীজ মিশিয়ে খেতে পারেন। 

২) সকালে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম: কালোজিরা খাওয়ার সঠিক সময় হচ্ছে সকালবেলা। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে কি হয় আপনারা জানেন কি? আপনার বদহজম কমাতে ও দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য  ৫০০ মিলিগ্রাম কালোজিরা ভেজে গুঁড়ো করে নিন। এরপর গুঁড়ো করা কালোজিরার সাথে ৭-৮ চামচ দুধ মিশিয়ে পান করুন। টানা ৭ দিন সকাল বেলা এই নিয়মে কালোজিরা খেতে থাকুন। 

৩) রসুন মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম: মধু ও কালোজিরা খেলে দেহের অতিরিক্ত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের রাখা সম্ভব। সেজন্য এক চা চামচ মধু নিয়ে তার সাথে সমপরিমাণ ভালো মানের কালোজিরার তেল মেশাতে হবে। তারপর মিশ্রণটি খেয়ে ফেলতে হবে। অধিক উপকার পাওয়ার জন্য সকালে দুই কোয়া রসুন খেয়ে সমস্ত দেহে কয়েকবার কালোজিরার তেল মালিশ করতে হবে। আশা করি মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম আপনারা বুঝতে পেরেছেন। 

৪) কালোজিরা ক্যাপসুল খাওয়ার নিয়ম: কালোজিরা তেলের যাবতীয় উপকার কালোজিরা ক্যাপসুল খাওয়ার মাধ্যমে পাওয়া যায়। কালোজিরা ক্যাপসুল বুক জ্বালাপোড়া সমস্যা খুব সহজে দূর করতে পারে। এজন্য প্রতিদিন খাওয়ার পরে ১/২ টি কালোজিরা ক্যাপসুল খাওয়া যেতে পারে। এই নিয়মে ২/৩ মাস কালোজিরা ক্যাপসুল খেলে ভালো সুফল পাওয়া যাবে। 

৫) কালোজিরার তেল খাওয়ার নিয়ম: সরাসরি কালোজিরার তেল খাওয়া যায় না। মাথা ও ঘাড়ের রোগ সারাতে এবং রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এক চা চামচ কালোজিরার তেল, এক চা চামচ মধু, এক কাপ লিকার চায়ের সাথে মিশিয়ে দৈনিক অন্তত তিনবার পান করুন। কালোজিরার তেল খাওয়ার চাইতে এটি দেহে ও মাথায় মালিশ করলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। অতএব আপনারা পোষ্টের এই অংশ থেকে কালোজিরা খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানতে পারলেন। 

কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা

বন্ধুরা আপনারা নিশ্চয়ই কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানার উদ্দেশ্যে এই পোস্টে প্রবেশ করেছেন। কালোজিরা খাওয়ার সঠিক সময় ও নিয়ম অনুসরণ করে কালোজিরা খেলে বহুবিধ সুফল পাওয়া যায়। এবার চলুন এক নজরে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা কি কি তা বিস্তারিত জেনে ফেলি। 

  • স্মরণ শক্তি বৃদ্ধিতে: পুদিনা পাতা ও কমলার রস কালোজিরা সাথে মিশিয়ে খেলে এটি মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। ফলে স্মরণশক্তি বৃত্তি পায়। এভাবে প্রতিদিন কালোজিরা খেলে দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা যায়।কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা কি তা হলো এটি আমাদের স্মৃতিশক্তিকে উন্নত করে।
  • চুল পড়া কমানো: কালোজিরার তেলে এত এত উপাদান রয়েছে যে এটি চুলের গোড়াকে মজবুত করে চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ করে। সেই সাথে এটি চুলের অকালপক্কতা রোধ করে। চুলকে আরো আকর্ষণীয় সিল্কি করার জন্য নিয়মিত চুলের গোড়ায় ভালোভাবে কালিজিরার তেল মালিশ করা যেতে পারে। 
  • হজম শক্তি বৃদ্ধিতে: পরিমাণমতো কালো জিরা বেটে নিয়ে তা মধু সহযোগে খেলে কয়েক মাসের মধ্যেই গ্যাস্ট্রিক, আমাশয়, কিডনি রোগ সহ হজমের সাথে সম্পর্কিত যে কোন সমস্যা দূর হয়ে যাবে। হজম শক্তি বৃদ্ধিতে কালোজিরা ভেজে খাওয়ার জুড়ি মেলা ভার। কালোজিরা ভেজে খাওয়ার উপকারিতা হলো এটি ভাজলে এতে থাকা রোগ জীবাণুগুলো দূর হয় এবং পরিপূর্ণ পুষ্টি লাভ করা যায়। 
  • সুন্দর ঘুম: পরিপূর্ণ ও সুন্দর ঘুমের জন্য রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে মাথায় কালোজিরার তেল ভালোভাবে মালিশ করতে হবে। যাদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। 
  • চর্মরোগ প্রতিরোধ: যাদের চর্ম রোগ রয়েছে তারা আক্রান্ত স্থানে কালোজিরার তেল মালিশ করলে ভালো ফলাফল পাবেন। এছাড়াও চর্মরোগ প্রতিরোধ করার জন্য হলুদের সাথে কালোজিরার তেল ও মধু মিশিয়ে ২/৩ সপ্তাহ খেতে পারেন। 
  • ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ ও হার্টের সমস্যা দূর: হার্টের রোগীদের জন্য কালোজিরার তেল নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। হার্টের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে কালোজিরার তেল ও দুধ প্রত্যেকদিন অন্তত একবার পান করুন। আর মধুসহ কালোজিরা খেলে এটি আমাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। দৈনিক কালোজিরা ভর্তা খাওয়ার উপকারিতা হলো এটি শরীরের অভ্যন্তরীণ জটিল রোগ প্রতিরোধ করে।
  • যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে: মধ্যযুগে যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কালোজিরার তেল ব্যবহার করা হতো। কালোজিরা পুরুষের দেহের শুক্রাণু সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। ফলে পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। জাইতুনের তেল, কালোজিরার তেল, মধু একত্রে মিশিয়ে ৩/৪ সপ্তাহ খেলে এটি যৌন স্বাস্থ্যের জন্য দারুন উপকারী হবে।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: রসুন ও কালোজিরার উপকারিতা সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে। এছাড়াও ১ চিমটি কালিজিরা প্রত্যহ সকালে পানির সাথে মিশিয়ে খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এতক্ষণ পর্যন্ত পোস্টটি পড়ে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা আপনারা অনেকটাই বুঝতে পারলেন। 
  • হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ: যারা হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছেন তাদের খাদ্য তালিকায় কালোজিরা ভর্তা সংযুক্ত করুন। কালোজিরা ভর্তা শ্বাসকষ্ট থেকে উপশম ঘটাতে ব্যাপক সহায়ক। তাছাড়াও হাঁপানি প্রতিরোধে কালোজিরা তেল, এক কাপ দুধ ও চা তিনবার করে খেলে উপকার পাবেন। 
  • মাথা ব্যথা ও সর্দি নিরাময়: হঠাৎ মাথা ব্যথা প্রতিরোধ করার জন্য ১/২ চামচ কালোজিরার তেল মাথায় ভালোভাবে মালিশ করতে হবে। ঘাড়, বুক, পিঠ, চিবুক সর্বত্র ভালোভাবে মালিশ করলে দারুন উপকার পাবেন। এছাড়াও তুলসী চায়ের সাথে মধু এবং কালোজিরা মিশিয়ে খেলে সর্দি কাশি থেকে মুক্তি মিলবে। 
  • স্বাস্থ্যের সার্বিক উন্নতিতে: দৃষ্টিশক্তি উন্নত করা, দাঁতের ব্যথা দূর করা, পিঠের ব্যথা দূর করা, অনিয়মিত মাসিক নিয়ন্ত্রণ, জন্ডিস ও লিভার সমস্যা দূর করণ, বাতের ব্যথা থেকে মুক্তি সহ দেহের যাবতীয় রোগের বিরুদ্ধে কালোজিরা অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কাজ করে। সুতরাং আপনারা কালোজিরার যাবতীয় উপকারী দিক জেনে ফেললেন। 

কালোজিরা বেশি খেলে কি হয় | টানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে কি হয় 

পূর্ববর্তী অংশে আপনারা কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সমূহের মধ্য হতে এর উপকারী দিক সম্পর্কে বিস্তর অবগত হয়েছেন। আপনারা কি জানেন কালোজিরা বেশি খেলে কি হয়? প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত কোন জিনিস খাওয়াই উচিত নয়। কালোজিরা আমাদের কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণ করে ঠিকই তবে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত কালোজিরা খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তবে টানা সাত দিন সঠিক নিয়মে কালোজিরা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, ডায়াবেটিস রোগীদের গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। অতএব পরিমিত পরিমাণ কালোজিরার উপকারিতা অনেক বেশি পাওয়া যায়। 

রাতে কালোজিরা খেলে কি হয় 

রাতে কালোজিরা খেলে কি গ্যাস হয় কিনা কেমন আশঙ্কা অনেকের মধ্যেই রয়েছে। আপনাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই রাতে কালোজিরা খেলে এটি আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি ও পেট ফাঁপা ভাব যথাসম্ভব দূর করে। কালোজিরা, পেঁয়াজ, মধু ও রসুন একত্রে মিক্স করে প্রত্যেকদিন রাত্রিবেলা ৩/৪ মাস খেলে পেটের যাবতীয় গ্যাস দূর হওয়ার পাশাপাশি হজমশক্তি বহু গুণে বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে পান কালোজিরা খেলে এটি উচ্চ রক্তচাপ এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে দৈহিকভাবে আমাদের সতেজ করে তোলে। অতএব আপনারা বুঝতে পারলেন, কালোজিরা খেলে গ্যাস হয় না; বরং কালোজিরা পেটের গ্যাস দূর করতে ফলপ্রসু ভূমিকা পালন করে। সুতরাং কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা আপনারা অনেকটাই অবগত হতে পেরেছেন। 

কালোজিরা খাওয়ার অপকারিতা | কালোজিরার ক্ষতিকর দিক

কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতার মধ্য হতে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা কি কি এ বিষয়টি আপনারা পোস্টের পূর্ববর্তী অংশ থেকে জেনে নিয়েছেন। এবার কালোজিরার ক্ষতিকর দিক সমূহ জেনে নিন। 
  • কালোজিরা অতিরিক্ত স্কিনে লাগালে এটি এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে। 
  • অতিরিক্ত পরিমাণ কালোজিরা খেলে এটি রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা প্রদান করে। ফলে কোথাও কেটে গেলে রক্তপাত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। 
  • কালিজিরা বেশি পরিমাণে খেলে দেহে শর্করার পরিমাণ আকস্মিকভাবে কমে যেতে পারে। এমতাবস্থায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরী। 
  • কালোজিরা বেশি খেলে পাকস্থলী সংকুচিত হয়ে বমি বমি ভাব ও বুক জ্বালাপোড়া করার সমস্যা দেখা দিতে পারে। 
  • কালোজিরা খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মহিলাদের অকাল গর্ভপাতের সম্ভাবনা থেকে যায়। 
কালোজিরার অপকারি দিক ততটা বেশি নয়। নিয়মিত সঠিক উপায় কালোজিরা খেলে এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে যে কোন রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে। এজন্যই হাদিসে কালোজিরা কে সর্বরোগের মহাঔষধ বলে অভিহিত করা হয়েছে। কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা পূর্ণাঙ্গভাবে না জেনে থাকলে পোস্টটি শুরু থেকে আবারও পড়তে পারেন। 

কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম হাদিস

আপনারা ইতোমধ্যে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। ইসলামের দৃষ্টিতেও কালোজিরার বহুবিধ উপকারিতার কথা উল্লেখ রয়েছে। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "কালোজিরায় সর্ব রোগের উপশম রয়েছে, তবে আস্সাম ব্যতীত। আস্সাম হলো মৃত্যুবরণ" (মুসলিম- হাদিস নং- ৫৬৫৯)। সুতরাং এই হাদিসটি থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় মৃত্যু ব্যতীত যেকোনো রোগের উত্তম প্রতিষেধক হিসেবে কালোজিরা খাওয়া যেতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত কালোজিরা খেলে যেকোনো দুরারোগ্য ও কঠিন ব্যাধি থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব। অতএব কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম হাদিস অনুযায়ী আপনারা বুঝতে পেরেছেন। 

শেষ কথাঃ কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা 

বন্ধুরা নিশ্চয়ই আজকের এই পোষ্টটি সম্পূর্ণটি পড়ে আপনারা কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও সময় সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছেন। একই সাথে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিত জেনে নিয়েছেন। পোস্টে উল্লেখিত নিয়ম অনুসরণ করে কালোজিরা খেলে আপনারা মানসিকভাবে চাঙ্গা থাকার পাশাপাশি  দৈহিকভাবে যথাসম্ভব  সুস্থ থাকতে পারবেন। পোস্টটি কেমন লাগলো তা আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আর অন্যদের কালোজিরার উপকারিতা ও অপকারিতা জানানোর জন্য পোস্টটি সর্বত্র শেয়ার করে দিন। নিত্যনতুন স্বাস্থ্য বিষয়ক চমৎকার পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। 

FAQs (সাধারণ জিজ্ঞাসা) 

প্রশ্ন: প্রতিদিন কতটুকু কালোজিরা খাওয়া উচিত?
উত্তর:
দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, যৌন ক্ষমতা ধরে রাখা সহ যাবতীয় শারীরিক উন্নতির জন্য প্রত্যেকদিন এক চিমটি পরিমাণ কালোজিরা পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। কালোজিরা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দারুন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। 

প্রশ্ন: কালোজিরার ইংরেজি নাম কি?
উত্তর: কালোজিরার ইংরেজি নাম হল Black Caraway বা Black Cumin.

প্রশ্ন: কালোজিরা খেলে কি গ্যাস হয়?
উত্তর: যাদের অত্যাধিক গ্যাসের সমস্যা রয়েছে তাদের প্রায় সব ধরনের খাবারই গ্যাস হয়। কালোজিরা খেলে গ্যাস হয় না; বরং এটি পেটের গ্যাস দূর করতে সহায়তা করে।

প্রশ্ন: কালোজিরা ও কালোজিরা তেল কি একই?
উত্তর: উপাদানগত দিক থেকে কালোজিরা ও কালোজিরা তেল প্রায় একই। তবে প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে কালোজিরা থেকে কালোজিরার তেল তৈরীর সময় কালোজিরাকে আরো ঘনীভূত করে একে আরো কার্যকরী করা হয়।

প্রশ্ন: কালোজিরা কি কি রোগের ঔষধ?
উত্তর: কালোজিরা শ্বাসকষ্ট, লিভার সিরোসিস, জন্ডিস, গ্যাস্ট্রিক, মাথাব্যথা, ডায়াবেটিস সহ যাবতীয় রোগের প্রাকৃতিক প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। 

প্রশ্ন: কালোজিরা খেলে কি বাচ্চা হয়?
উত্তর: গর্ভবতী মায়েদের অকাল গর্ভপাতের জন্য কালোজিরাকে দায়ী করা হয়। আবার ভেষজ চিকিৎসায় বাচ্চা হওয়ার জন্য কালোজিরার বিভিন্ন ঔষধ সাজেস্ট করা হয়। 

প্রশ্ন: কালোজিরা খেলে কি ওজন কমে?
উত্তর: কালোজিরায় ক্যালরি থাকলেও এটি দেহের চর্বি কাটায়। আর কালোজিরা আঁশ যুক্ত খাবারের সাথে মিশিয়ে খেলে শরীরের ওজন কমানো সম্ভব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
2 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
  • Md Baki
    Md Baki 21 December 2023 at 13:10

    পোষ্টটি অত্যন্ত উপকারী

  • রয়েল আইটি ✅
    রয়েল আইটি ✅ 24 March 2024 at 00:38

    অনেক সুন্দর একটিসপোস্ট

এই পোস্টে কমেন্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

অনির্বাণ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url