গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - গাজর খেলে কি হয় শরীরে

শীতকালীন সবজি হিসাবে গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা না জেনে থাকলে এই পোস্টটি হতে চলেছে আপনার জন্য। আমাদের অনেকেরই পছন্দের সবজি হলো গাজর। আজকের এই আর্টিকেলে তাই আমরা গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা উল্লেখ করার পাশাপাশি গাজরে কোন ভিটামিন থাকে সে ব্যাপারে আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেব।
গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - গাজর খেলে কি হয় - গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা
আমাদের দেশে গাজর একটি শীতকালীন সবজি হিসেবে সুপরিচিত। শীতকালে বেশিরভাগ বাড়িতেই ভাতের সাথে গাজরের বিভিন্ন তরকারির দেখা মেলে। এর ফ্লেভার  অনেক সুন্দর এবং খেতে সুস্বাদু হওয়ায় অনেকে সালাদ হিসাবেও গাজর খেয়ে থাকেন। আদর্শ সবজি হিসেবে তাই গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতার কথা না বললেই নয়। আজকের আর্টিকেলে আমরা মূলত আলোচনা করব গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, গাজর খাওয়ার সঠিক নিয়ম, গাজরের পুষ্টিগুণ এবং গাজর খেলে কি হয় সে সম্পর্কে।

পোস্ট সূচিপত্র - গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - গাজর খেলে কি হয় জানুন

গাজরের পুষ্টিগুণ ও উপাদান - গাজরে কোন ভিটামিন থাকে 

বন্ধুরা গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্বন্ধে জেনে নেবার পূর্বে অবশ্যই গাজরের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে আপনার সঠিক ধারণা থাকতে হবে। গাজরের পুষ্টিগুণ গুলো সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য জানা থাকলে গাজর আমাদের দেহের জন্য কতটা উপকারি কিংবা গাজর খেলে কি ক্ষতি হতে পারে সে বিষয়টি বুঝা অনেক সহজ হবে। চলুন বন্ধুরা গাজরের পুষ্টি উপাদান গুলো কি কি এবং গাজরে কোন ভিটামিন থাকে  তা প্রথমে জেনে ফেলি।

গাজরের প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন রয়েছে। আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন শাকসবজিতে সরাসরি ভিটামিন এ থাকে না। এই বিটা ক্যারোটিনই ভিটামিন এ হিসেবে কাজ করে থাকে। এছাড়াও গাজরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পটাশিয়াম ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন কে ও মিনারেল রয়েছে। অতএব গাজরে কোন ভিটামিন থাকে তা জানতে পারলেন। প্রতি ১০০ গ্রাম গাজরে আপনি নিম্নলিখিত খাদ্য উপাদানগুলো পাবেন। 

  • ক্যারোটিন ১০,৫০০ মাইক্রোগ্রাম 
  • পানি ৮৫ গ্রাম 
  • ভিটামিন বি ৫০৪.২ মিলিগ্রাম 
  • আমিষ ১.৩ গ্রাম
  • চর্বি ০.২ গ্রাম
  • শর্করা ১২.৭ গ্রাম 
  • ক্যালসিয়াম ২৭ মিলিগ্রাম 
  • ভিটামিন বি২, ০.০৫ মিলিগ্রাম 
  • আয়রন ২.২ মিলিগ্রাম 
  • খনিজ লবণ ০.৯ গ্রাম
  • আঁশ রাফেজ ১.২ গ্রাম
  • এনার্জি ৫৭ কিলো-ক্যালরি 

গাজর খাওয়ার সঠিক নিয়ম | গাজর খাওয়ার উপযুক্ত সময় 

গাজর খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুব কমই রয়েছে। তবে গাজর খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেরই সঠিক ধারণাটি নেই। বিভিন্ন নিয়মে আপনি গাজর খেতে পারেন। চলুন গাজর খাওয়ার সঠিক নিয়মগুলো আমরা এবার এক নজরে দেখে ফেলি। তারপরে আমরা পর্যায়ক্রমে গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্বন্ধে জানবো। 

আরও পড়ুন: গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম - গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া যাবে কি

  • কাঁচা গাজর: গাজর খাওয়ার সবচেয়ে সহজ এবং প্রাকৃতিক উপায় হলো এটি কাঁচা অবস্থাতেই খাওয়া। কাঁচা গাজর খাওয়ার নিয়ম হলো, ভালো মানের কয়েকটি গাজর সংগ্রহ করে আপনি সেগুলো কেটে টুকরো করে খেতে পারেন। তাছাড়া কামড় দিয়েও অনায়াসে এটি খেতে পারবেন। কাঁচা অবস্থায় খেলে গাজরের ভেতরে থাকা পুষ্টি উপাদানগুলো পুরোপুরিভাবে দেহ গ্রহণ করবে। কাঁচা গাজর খাওয়ার সময় হলো সকালে খালি পেটে খাওয়া।

  • গাজর রান্না করে: ইতোমধ্যে কাঁচা গাজর খেলে কি হয় সে ব্যাপারটি জেনেছেন। আপনারা চাইলে সুস্বাদু ভাবে গাজর রান্না করেও খেতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয় সবজির মধ্যে মিক্সড ফুড হিসেবে গাজর রাখলে। এছাড়া গাজর সেদ্ধ করেও রান্না করা যায়। রান্না গাজর খেলে শরীরের হজম শক্তি বাড়ে এবং শরীরে বিটা ক্যারোটিন শোষিত হয়।

  • গাজরের সালাদ: শীতকালে খাবারে একটি বাড়তি স্বাদ যোগ করতে গাজরের সালাদের জুড়ি মেলা ভার। গাজরের সালাদ একদিকে যেমন সুস্বাদু তেমনি এটি স্বাস্থ্যকরও বটে। বিভিন্ন সবজি ও বাদাম একসাথে মিক্স করে কাজলের সালাদ আপনারা তৈরি করতে পারেন।

  • গাজরের স্যুপ: যারা পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন অথবা যাদের শরীর দুর্বল তারা চাইলে গাজরের স্যুপ বানিয়ে খেতে পারেন। গাজরের স্যুপ বেশ উষ্ণ ও পুষ্টিকর একটি খাবার। মাংস, মসলা ও অন্যান্য উপাদান দিয়ে খুব মজাদার গাজরের স্যুপ তৈরি করা যায়। স্যুপ হিসাবে গাজর খাওয়ার উপযুক্ত সময় হলো শীতকাল।

  • গাজরের হালুয়া: শহরাঞ্চলে অতটাও প্রচলিত না হলেও গ্রামাঞ্চলে গাজরের হালুয়া খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। চিনি, ময়দা, দুধ ও অন্যান্য উপাদানের সমন্বয়ে মুখরোচক গাজরের হালুয়া তৈরি করেও আপনারা খেতে পারেন। আর গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা তথা গাজর খেলে কি হয় তা জানার জন্য পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ে নিন।

প্রতিদিন কতটুকু গাজর খাওয়া উচিত? 

প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোন খাবার খাওয়াই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। কাঁচা গাজর খেলে কি ধরনের উপকার হয় তা আপনারা পোষ্টের পূর্ববর্তী অংশ থেকে জানতে পেরেছেন। গাজর আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বৃদ্ধি করে তেমনি আমাদের দৃষ্টিশক্তি ও ত্বকের উন্নতিতে দারুন ভূমিকা রাখে। তাহলে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন কত গ্রাম গাজর খাওয়া উচিত? পুষ্টিবিদদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম গাজর খাওয়া উচিত। আর শিশুদের ক্ষেত্রে ৫০ থেকে ৭৫ গ্রাম তথা মাঝারি আকারের দুটি গাজর খাওয়া যেতে পারে।

গাজর খেলে কি হয় শরীরে - গাজর খেলে কি গ্যাস হয়

গাজর এমন একটি সবজি যার উপকারী ও ক্ষতিকর দুই রকম ভূমিকাই রয়েছে। তবে গাজর এর উপকারিতা অনেক বেশি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে গাজরের ক্ষতিকর দিকও লক্ষ্য করা যায়। খালি পেটে গাজর খেলে সেটি আমাদের শরীরে পুষ্টি সরবরাহের পাশাপাশি আমাদের ত্বককে উন্নত করে। তাছাড়াও গাজর হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। তবে বেশি পরিমাণে গাজর খেলে সেটি পেটে গ্যাস ও বদহজম সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং গাজর খেলে কি হয় সেটি বুঝে গেলেন।

গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা 

বন্ধুরা গাজর খাওয়ার নিয়ম কেমন তার ভেতরে গাজর কাঁচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা খানিকটা ধারণা পেয়েছেন। এবার বৃহৎ পরিসরে আমরা আলোচনা করব গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। প্রথমে গাজর খেলে কি উপকার পাওয়া যায়, তা বিস্তারিত উল্লেখ করলাম।

গাজর এর উপকারিতা:

  • ক্যান্সার প্রতিরোধে: বিশ্বজুড়ে ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সেক্ষেত্রে ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ গাজর বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার যেমন: প্রোস্টেট, পাকস্থলী, কোলন ইত্যাদি ক্যান্সার হতে আমাদের দেহকে রক্ষা করে। গাজরে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

  • লিভারের সমস্যা দূর করে: গাজরে থাকা ভিটামিন ও ক্যালসিয়ামগুলো লিভারের যেকোনো সমস্যার বিরুদ্ধে প্রহরীর মত ভূমিকা পালন করে। যার ফলে লিভার সিরোসিস, হেপাটাইটিস, কোষ্ঠকাঠিন্য সহ বিভিন্ন ধরনের গুরুতর সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।

  • হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে: সবজি হিসেবে গাজর পটাশিয়ামের একটি বৃহৎ উৎস। আর পটাশিয়াম আমাদের হার্টকে সুস্থ রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। ফলে সারা দেহে রক্ত সরবরাহের প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার সম্ভব হয়। হার্ট সুস্থ রাখতে প্রতিদিন একটি করে গাজর খেতে পারেন।

  • কোলেস্টরেল কমাতে ও রক্ত পরিষ্কার: রক্তের ভেতর অতিরিক্ত কোলেস্টেরল জমা হওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, কারণ অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের জন্য হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। সেজন্য শরীরে কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে গাজর খাওয়ার বিকল্প নেই। এছাড়াও গাজর রক্ত পরিষ্কার করে রক্তকে পরিশুদ্ধ করতে ভূমিকা রাখে। 

  • হজম শক্তি ত্বরান্বিত করতে: যার হজমশক্তি যত ভাল সেই ব্যক্তি ততই সুস্থ এবং প্রাণবন্ত। তাই আপনার হজম শক্তিকে বৃদ্ধি করার জন্য গাজরে থাকা ফাইবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। হজম শক্তিকে ত্বরান্বিত করতে প্রতিদিন গাজরের স্যুপ অথবা সালাদ বানিয়ে খেতে পারেন।

  • যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে: যৌন স্বাস্থ্যের দিক থেকে যারা দুর্বল তাদের জন্য সেক্সে গাজরের উপকারিতা এর কথা না বললেই নয়। গাজর আমাদের সেক্স পাওয়ার বৃদ্ধি করার পাশাপাশি আমাদের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে শরীরকে অনেক শক্তিশালী করে তোলে।

  • ত্বকের যত্নে: ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিকভাবে ত্বককে প্রাণবন্ত ও আকর্ষণীয় করতে গাজরের অবদান উল্লেখযোগ্য। অনেকের একটি ধারণা রয়েছে গাজর খেলে কি ত্বক ফর্সা হয়? তাদের উদ্দেশ্যে বলবো গাজরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ই এবং এ আমাদের ত্বকের বলিরেখাগুলো দূর করে ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা ও টানটান করে।

  • ওজন ও ফ্যাট কমাতে: গাজরের বেশিরভাগ অংশই জলীয় উপাদানে ভরপুর। গাজরে থাকা ফাইবার গুলো শরীরে পানির চাহিদা পূরণ করে এবং ফ্যাট কাটিয়ে তোলে। তাই আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগী হয়ে থাকেন এবং স্বাস্থ্যসম্মত একটি ওজন বজায় রাখতে চান তাহলে নিয়মিত গাজর খেতে পারেন। অতএব গাজর খেলে কি হয় সে সম্বন্ধে অনেকটাই ধারণা পেলেন। 

  • স্মৃতিশক্তি উন্নত এবং মানসিক প্রশান্তিতে: গাজরে উপস্থিত বিটা ক্যারোটিন গুলো আমাদের মস্তিষ্কের ক্ষয় রোধ করে এবং স্মৃতিশক্তিকে উন্নত করে। এছাড়াও টেনশন মুক্ত সুস্থ জীবন যাপনের জন্য প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় গাজর রাখুন।

  • দাঁত ও হাড় গঠনে: গাজরের রস এবং গাজরে থাকা ভিটামিন সি দাঁতের মাড়িকে শক্তিশালী করে এবং মুখে লালা উৎপাদন বৃদ্ধি করে। আর গাজরে থাকা ক্যালসিয়াম আমাদের হাড়কে মজবুত করতে ফলপ্রসূ ভূমিকা পালন করে। হাড়ের ক্ষয় রোধ করার জন্য গাজরের ভূমিকা অপরিসীম।

  • মস্তিষ্কের সুরক্ষা: আমাদের দেহের সামগ্রিক কর্মকান্ড মস্তিষ্ক থেকে পরিচালিত হয়। তাই শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ ও নার্ভ সিস্টেমকে উন্নত করার জন্য গাজরে থাকা উপাদানগুলো নিয়ামতের ভূমিকা পালন করে। মস্তিষ্ককে সুগঠিত করার জন্য তাই গাজর অত্যন্ত উপকারী একটি সবজি।

  • অ্যান্টিসেপটিক হিসাবে কাজ করে: কোথাও কেটে গেলে সেখানে দ্রুততর সময় রক্ত বন্ধ করার জন্য গাজর কুচি করে লাগিয়ে রাখুন। গাজরে থাকা উপাদান গুলো অতিরিক্ত রক্তপাত বন্ধ করতে সাহায্য করে। সেজন্য রক্ত বন্ধ করার বিভিন্ন ঔষধ গাজরের অ্যান্টিসেপটিকগণকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হয় 

বন্ধুরা পোষ্টের এই অংশটি থেকে নিশ্চয়ই আপনারা গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতার মধ্য হতে কত রকম উপকারী দিক রয়েছে সে বিষয়টি পূর্ণাঙ্গভাবে জানতে পারলেন। অতএব প্রতিদিন গাজর খাওয়ার উপকারিতা কতটা তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে গাজরের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কেও আমাদের সচেতন থাকতে হবে। চলুন অতিরিক্ত গাজর খেলে কি হয় তা পরবর্তী অংশ থেকে জেনে ফেলি।

গাজর এর অপকারিতা কি কি - গাজরের ক্ষতিকর দিক

গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতার মধ্য থেকে গাজর খেলে কি উপকার হয় সে সম্বন্ধে আপনারা বিস্তর ধারণা লাভ করেছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে গাজর খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই স্বাস্থ্য সচেতনতার অংশ হিসেবে গাজর খেলে কি ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে এবার গুরুত্বপূর্ণ কিছু আলোচনা করব।

আরও পড়ুন: বরই খেলে কি উপকার হয় - গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার উপকারিতা

গাজর খাওয়ার অপকারিতা:

  • অল্প বয়সী শিশুরা অধিক পরিমাণে গাজর খেলে দাঁতের ক্ষয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 
  • গরমের দিনে গাজর খেলে উচ্চ রক্তচাপ ও অনিদ্রার সমস্যা দেখা দিতে পারে। 
  • প্রয়োজনের চেয়ে বেশি গাজর খেলে বদ হজম, পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি ইত্যাদি সমস্যার সৃষ্টি হয়।
  • প্রচুর পরিমাণে গাজর খাওয়ার দরুন ত্বকের বর্ণ হলুদ হয়ে যেতে পারে। 
  • গর্ভাবস্থায় গাজর খেলে এটি গর্ভবতী নারীদের দুধের স্বাদ পরিবর্তন করে দিতে পারে।
  • গাজরে থাকা উচ্চ মাত্রার ক্যারোটিন শরীরে ক্যান্সারের জীবাণু সৃষ্টি করতে পারে। 
  • গাজরে প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি রয়েছে তাই ডায়াবেটিস রোগীদের কম পরিমাণে গাজর খাওয়া উত্তম। অতএব বেশি গাজর খেলে কি হয় তা আপনারা বুঝতে পারলেন। 

শেষ কথা - গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা - গাজর খাওয়ার নিয়ম 

প্রিয় বন্ধুরা, যদি আপনারা সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তবে নিশ্চয়ই গাজর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছেন। পোস্টটি পড়ার পরে এখন যে কাউকে গাজর খেলে কি উপকার হয় এ তথ্যটি জানাতে পারবেন। সেই সাথে এই পোস্টে আমরা গাজর খেলে কি হয় শরীরের তা বিস্তারিত উল্লেখ করেছি। অতএব পোস্টটি শেয়ার করুন এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক নানা টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন।

FAQs (গাজর নিয়ে জিজ্ঞাসা)

প্রতিদিন একটা করে গাজর খেলে কি উপকার হয়?
উত্তর: প্রতিদিন একটি করে গাজর খেলে আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বাড়বে, তেমনি সেটি ত্বক, চোখের উন্নতি করার পাশাপাশি সমগ্র স্বাস্থ্যের পুষ্টিবর্ধনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। 

গাজর খাওয়ার সঠিক সময় কখন? 
উত্তর: যেকোনো সময়েই গাজর খাওয়া যেতে পারে। তবে সকাল বেলা কাঁচা গাজর খেলে এটি শরীরের জন্য সবচেয়ে ভালো হয়। এ সময় পেট ফাঁকা থাকে এবং শরীর গাজর থেকে পরিপূর্ণরূপে পুষ্টি আহরণ করতে পারে।
 
গাজর কি স্টার্চ?
উত্তর: গাজরকে এক ধরনের স্টার্চ বলা যায়। কেননা এতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শর্করা রয়েছে। যদিও গাজরের অধিকাংশ অংশই জলীয় উপাদানে ভরপুর।
 
গাজর খেলে কি ওজন কমে? 
উত্তর: হ্যাঁ, গাজর খেলে আপনার ওজন কমে যাবে। কারণ গাজরে অল্প পরিমাণ ক্যালরি থাকে যা আপনার পেটকে দীর্ঘক্ষণ ভরিয়ে রেখে ক্ষুধা কমাবে ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
 
গর্ভাবস্থায় গাজর খাওয়া যাবে কি? 
উত্তর: গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পুষ্টি নিশ্চিতে গাজর হতে পারে আদর্শ একটি খাবার। তবে কোনো মায়ের গাজর খেলে এলার্জি বা গ্যাসের মত সমস্যা যদি দেখা দেখা দেয় তবে গর্ভাবস্থায় গাজর খাওয়া এড়িয়ে চলাই উত্তম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
এই পোস্টে কমেন্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

অনির্বাণ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url