শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে রাখাটা জরুরী। নানা কারণে বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। শিশুদের নিউমোনিয়া হলে করণীয় বিষয়গুলো যদি আপনার না জানা থাকে তবে এই পোস্টটি আপনাদের জন্য অনেক উপকারী হবে। অতএব, শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে সম্পূর্ণ পোস্টটি এখনই গুরুত্ব সহকারে পড়ে ফেলুন। 
শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
শীতকালে নবজাতকের নিউমোনিয়ার লক্ষণ অধিক মাত্রায় পরিলক্ষিত হয়। বাচ্চার নিউমোনিয়ার লক্ষণ অনেকে পুরোপুরি বুঝতে না পেরে অনেকেই বাচ্চার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেন না। কিন্তু নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্রই নিউমোনিয়া রোগের চিকিৎসা করা উচিত। আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা শিশুর নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারবেন। তাই শিশুদের নিউমোনিয়া হলে করণীয় বিষয়গুলো জেনে জন্য পুরো পোস্টটি একবার মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। 

পোস্ট সূচিপত্র - শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার জানুন 

নিউমোনিয়া কী

নিউমোনিয়া হলো ফুসফুসের প্রদাহ জনিত এক ধরনের সমস্যা যার ফলে ফুসফুস ও শ্বাসযন্ত্র মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে অনেক সমস্যা হয় এবং শারীরিক নানা জটিলতা দেখা দেয়। নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুর সঠিক চিকিৎসা সময় মত না করা গেলে শিশুটির মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই নিউমোনিয়ার লক্ষণগুলো জেনে নিয়ে সকলেরই নিউমোনিয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন থাকতে হবে। সাধারণত শীতকাল ও বর্ষাকালে নিউমোনিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। নিউমোনিয়া ইংরেজি বানান অনেকে ভুল করে থাকেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলব নিউমোনিয়ার সঠিক ইংরেজি বানান হলো Pneumonia. নিউমোনিয়া রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ১২ই নভেম্বর সারা বিশ্বে 'নিউমোনিয়া দিবস' হিসেবে পালন করা হয়। 

শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ 

বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ বিভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে। নিউমোনিয়ার লক্ষণ পূর্ব থেকে জানা থাকলে নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সহজ হয়। ডাক্তারেরা এ সকল লক্ষণ দেখেই নিউমোনিয়া রোগের চিকিৎসা করে থাকেন। তবে চলুন নবজাতকের নিউমোনিয়ার লক্ষণ সমূহ কি কি তা এবার জেনে ফেলি।
  • কাশির সাথে সবুজ বা হলুদ রঙের শ্লেষ্মা বের হলে। 
  • শ্বাস প্রশ্বাস নিতে অসুবিধা হয়। মাথা ঝাঁকাতে থাকে ও নাকের ছিদ্র বড় করে নিঃশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করে। 
  • বুক সহ সারা শরীরে ব্যথা অনুভূত হয়। বুক ভেতর দিকে চেপে যেতে পারে। 
  • ঘন ঘন জ্বর হয়। জ্বরের মাত্রা ১০৩° ছাড়িয়ে যায়।
  • খাবারের প্রতি তীব্র অনীহা সৃষ্টি হয় এবং শিশুরা হাত পা নাড়াচাড়া কম করে। 
  • অল্পতেই ক্লান্তিভাব চলে আসে।
  • কাশির সাথে রক্তপড়া। ৩ সপ্তাহের অধিক কাশি থাকা।
  • প্রচন্ড পরিমাণে ঠান্ডা লাগা, ঘাম ও অস্বস্তি দেখা দেওয়া। 
  • শিশুদের চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে যায় এবং প্রচুর কান্না করে।
  • অক্সিজেনের অভাব অনুভূত হওয়ায় শিশুর শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় এবং শরীর নীল হয়ে যেতে পারে। 
  • হৃদপিন্ডের গতি স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। যা স্টেথোস্কোপ এর সাহায্যে পরীক্ষা করলে আরো ভালো বোঝা যায়। 
উপরিক্ত একাধিক লক্ষণগুলো যদি প্রকাশ পায় তবে বুঝতে হবে শিশুটি নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে। শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের পেছনে মূল কারণগুলো কি এবার সে বিষয়টি আপনাদের জানাবো।

বাচ্চাদের নিউমোনিয়া কেন হয় | শিশুদের নিউমোনিয়া হওয়ার কারণ 

বন্ধুরা শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সুমির মধ্যে আপনারা নিউমোনিয়ার লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তর ধারণা লাভ করেছেন। বাচ্চাদের নিউমোনিয়া মূলত বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে। যে সকল ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া থেকে শিশুদের নিউমোনিয়া সংক্রমণ হতে পারে সেগুলো হলো:

  1. স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমনি 
  2. গ্রুপ বি স্ট্রেপ্টোকক্কাস
  3. ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস 
  4. এডেনো ভাইরাস 
  5. স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস 
নবজাতকের নিউমোনিয়া হওয়ার আরো কিছু কারণ ও ঝুঁকি:
  • চরম অপুষ্টিতে ভোগা শিশুরা নিউমোনিয়ায় অধিক আক্রান্ত হয়। এছাড়াও আক্রান্ত অন্য কোন শিশুর হাঁচি কাশি ও রক্ত থেকেও নিউমোনিয়া সংক্রমণ করতে পারে। 
  • বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক রোগ যেমন: হাম, খিচুনি, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি ইত্যাদির কারণে শিশুদের নিউমোনিয়া হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। 
  • জন্মগতভাবে যারা হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের ব্যধিতে আক্রান্ত এমন শিশুরা খুব সহজেই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। 
  • সদ্য জন্ম নেওয়ার শিশুর শ্বসনতন্ত্রে রোগ জীবাণু প্রবেশ করে ফুসফুসের অ্যালভিওলাইয়ে পৌঁছে যায়। ফলশ্রুতিতে শিশুর ফুসফুসের নমনীয়তা হারিয়ে শক্ত হয়ে যায়। এমতাবস্থায় তীব্র অক্সিজেন সংকটে শিশুরা নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়। 
  • অতিরিক্ত বায়ু দূষণের কারণেও শিশুরা নিউমোনিয়া আক্রান্ত হতে পারে। 
পোষ্টের এই অংশ থেকে আপনারা বাচ্চাদের নিউমোনিয়া হওয়ার নানা কারণ জেনে নিলেন। বাচ্চার নিউমোনিয়ার লক্ষণ সম্পর্কে এখনো না জেনে থাকলে আগের অংশ পড়ে ফেলুন। এবার শিশুদের নিউমোনিয়া হলে করণীয় বিষয়গুলো পরবর্তী অংশে তুলে ধরবো। এরপর ধাপে ধাপে শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আপনারা পুরোপুরি ধারণা পেয়ে যাবেন। 

শিশুদের নিউমোনিয়া হলে করণীয় ও প্রতিকার 

বন্ধুরা আপনারা নিশ্চয়ই শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নেওয়ার জন্যই এই পোস্টটি পড়া শুরু করেছেন। প্রতিবছর নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে অন্তত ২৫ হাজার শিশু মারা যায়। এছাড়াও সারা বিশ্বে পাঁচ মাসের কম বয়সী শিশুদের প্রায় ২০% ই নিউমোনিয়া হওয়ার কারণে মারা যায়। তবে চলুন নিউমোনিয়া হলে করণীয় কি তথা নিউমোনিয়া হলে কি ধরনের পদক্ষেপ নিলে তা মৃত্যু রোধ করতে পারে এ ব্যাপারে এবার জেনে নিই।
  • শিশুর নিউমোনিয়া হলে সর্বপ্রথম তার নাক পরিষ্কার করাতে হবে। নাক পরিষ্কার করলে খুব সহজেই নবজাতক বুকের দুধ পান করতে পারবে। 
  • নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুকে সবসময় পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করতে হবে। একবারে অধিক খাবার না দিয়ে তাকে বারে বারে খাবার খাওয়াতে হবে। যাতে তার ভেতর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হয়। 
  • এ সময় শিশুকে পানীয় জাতীয় খাবার যেমন: চা, পানি, মধু, শরবত ইত্যাদি খেতে দিতে হবে। এতে করে কাশি উপশম হতে শুরু করবে। 
  • নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুকে কখনোই ঠান্ডা জাতীয় খাবার সরবরাহ করা যাবে না। সব সময় তাকে গরম ও কোমল খাবার দিতে হবে। 
  • শিশুর অতিরিক্ত জ্বর আসলে কপালে জলপট্টি দিয়ে রাখতে হবে। প্রয়োজনে নির্দিষ্ট মাত্রায় প্যারাসিটামল সেবন করাতে হবে। 
  • আক্রান্ত শিশুকে কখনোই ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া উচ্চ মাত্রার এন্টিবায়োটিক ও সিরাপ খাওয়ানো যাবে না। 
  • নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুকে অন্য শিশুদের থেকে পৃথক রাখতে হবে। তাকে আলো বাতাস পূর্ণ জায়গায় রাখতে হবে, তবে বাতাসে যেন ঠান্ডা না লেগে যায় এ বিষয়ে নজর দিতে হবে। 
  • উপরোক্ত ঘরোয়া পদ্ধতিতে শিশুর নিউমোনিয়া দূর না হলে যত দ্রুত সম্ভব শিশুকে ডাক্তারের কাছে নিতে হবে। বন্ধুরা আশা করি শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার আপনাদের সামনে সুস্পষ্ট হয়েছে। 

নিউমোনিয়া প্রতিরোধের উপায় 

বন্ধুরা আপনারা ইতোমধ্যে শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য ধারণা পেয়েছেন। সব সময় মনে রাখবেন যেকোন রোগের প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই অধিক উত্তম। শিশুদের জন্য মারাত্মক এই নিউমোনিয়া প্রতিরোধে কার্যকরী বেশ কিছু উপায় এবার আপনাদের জানাবো। এ সকল উপায় যথাযথভাবে অনুসরণ করলে শিশুদের নিউমোনিয়া থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। 

  • টিকা প্রদান: নিউমোনিয়া থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্য সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো টিকা প্রদান করা। নিউমোনিয়ার টিকা কখন দিতে হয় অনেকে এই প্রশ্নটি করে থাকেন। বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে সরকার কর্তৃক টিকাদান কর্মসূচির আওতায় 'নিউমোভ্যাক্স ২৩' নামক এক ধরনের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়ে থাকে। 
  • এলার্জির টিকা: যে সকল শিশু এলার্জিতে আক্রান্ত তাদের নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করার জন্য ব্লু ভ্যাকসিন নামক এলার্জির টিকা দেওয়া হয়।
  • পুষ্টিকর খাবার: শিশুর দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য তাদের যথাযথ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার খেতে দিতে হবে। বিশেষ করে ভিটামিন জাতীয় খাবার, বুকের দুধ, সুপ, ফলের জুস, শাক অধিক পরিমাণে খাওয়াতে হবে। এগুলো নিউমোনিয়া রোগীর খাবার হিসেবেও খাওয়ানো যেতে পারে। তবে অতিরিক্ত ঠান্ডা জাতীয় ও তেল চর্বি জাতীয় খাবার অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে। 
  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: শিশুর অভিভাবকদের অবশ্যই শিশুর আশেপাশে থাকা পরিবেশকে যথাসম্ভব পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। হাঁচি এলেই টিস্যু দিয়ে মুছে দিতে হবে। শিশুরা যে সকল জিনিস বেশি স্পর্শ করে যেমন: বেড, টেবিল, খেলনা ইত্যাদি সাবান দিয়ে ভালোভাবে জীবনুমুক্ত রাখতে হবে। 
  • পরিবেশ দূষণ রোধ: শিশুর আশেপাশের পরিবেশে কোন খারাপ ধোঁয়া বা সিগারেটের ধোঁয়া যাতে সৃষ্টি না হয় এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। কোন কিছু মুখে দেওয়ার পূর্বে শিশুর হাত ভালোভাবে ধুয়ে দিতে হবে। 
  • চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ: নিউমোনিয়ার লক্ষণগুলো আংশিক প্রকাশ পেলেই শিশুকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে হবে।
সর্বদা স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিশুকে উপযুক্ত পরিবেশে রাখলে এবং উপরিউক্ত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অবশ্যই শিশুদের নিউমোনিয়া থেকে রক্ষা করা যাবে। শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার পুনরায় জানতে হলে আপনাদের পোস্টের আগের অংশ দেখতে হবে। 

নিউমোনিয়া রোগের চিকিৎসা

নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুর ফুসফুসের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে ডাক্তারেরা মূলত বিভিন্ন পদ্ধতিতে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। শিশুর দেহে যদি নিউমোনিয়ার ভয়াবহতা বৃদ্ধি পায় তবে শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অতঃপর নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে ডাক্তারেরা নিউমোনিয়ার চিকিৎসা করে থাকেন। 
  1. নিউমোনিয়ার এন্টিবায়োটিক: নিউমোনিয়ার ঔষধের নাম অনেকে অনুসন্ধান করে থাকেন। আমরা এখানে কোন নির্দিষ্ট ওষুধের নাম সাজেস্ট করছি না। কারণ একেকজনের একেক লক্ষণ দেখে ডাক্তারেরা নিউমোনিয়ার অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ দিয়ে থাকে। ঔষধ গুলো নিয়মিত সেবনে শিশুরা অধিক তাড়াতাড়ি আরোগ্য লাভ করে।
  2. কফ মেডিসিন: শীতকালে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু সাধারণত অধিক কফ হতে দেখা যায়। ফলে ডাক্তারেরা কাশির ঔষধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। 
  3. জ্বরের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ: শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের অন্যতম লক্ষণ হলো ঘন ঘন জ্বর হওয়া। তাই নিউমোনিয়ার চিকিৎসায় সর্বপ্রথম জ্বরের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের ঔষধ দেওয়া হয়।
  4. ইনজেকশন: শিশুর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে প্রাপ্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে শিশুর নিউমোনিয়া ইনজেকশন ডাক্তাররা পুশ করে থাকেন। তবে অধিকাংশ সময়েই ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে নিউমোনিয়ার চিকিৎসা করা হয়।
  5. অক্সিজেন দেওয়া: শিশুর অবস্থা গুরুতর হলে প্রয়োজনে কৃত্রিমভাবে তাকে শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখার জন্য অক্সিজেন দেওয়া হয়। এ সময় তার শ্বাসযন্ত্রের কার্যক্রম নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। আশা করি এ পর্যন্ত পোস্টটি পড়ে আপনারা শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা অর্জন করেছেন। 

শেষ মন্তব্যঃ শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার 

প্রিয় বন্ধুরা আজকের এই পোস্টে আমরা মূলত শিশুদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ, কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্পর্কে আপনাদের পূর্ণাঙ্গ ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করছি এই পোস্টে আলোচিত তথ্যগুলো শিশুর নিউমোনিয়া প্রতিরোধে যথেষ্ট কাজে আসবে। অতএব, শিশুর নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে কোন মতেই অবহেলা না করে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। উপযুক্ত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাই পারে নিউমোনিয়ার মত আকস্মিক রোগ থেকে শিশুদের রক্ষা করতে। পরিশেষে, অন্যদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে এই পোস্টটি তাদের মাঝে শেয়ার করে দিন। নিয়মিত স্বাস্থ্য বিষয়ক টিপস পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ। 

FAQs (নিউমোনিয়া সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তর)

প্রশ্ন: নিউমোনিয়া রোগের জীবাণুর নাম কি?
উত্তর: স্ট্রেপটোকক্কাস নামক ব্যাকটেরিয়া ও সিনসিশিয়াল ভাইরাসের আক্রমণে নিউমোনিয়া রোগের জীবাণু জন্ম লাভ করে। 

প্রশ্ন: নিউমোনিয়ার টিকা কখন দিতে হয়?
উত্তর: বাংলাদেশ সরকার প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে নিউমোনিয়ার টিকাদান কর্মসূচি দেশ ব্যাপী পরিচালনা করে। এ সময়ে নির্দিষ্ট বয়সী শিশুদের তার নিকটস্থ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে নিউমোনিয়ার টিকা গ্রহণ করতে পারে। 

প্রশ্ন: নিউমোনিয়া হলে কি খাবার খেতে হবে?
উত্তর: শিশু কিংবা বয়স্ক যেকোনো বয়সী ব্যক্তির নিউমোনিয়া হলে নরম ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। যথাসম্ভব ভিটামিন জাতীয় খাবার ও শাকসবজি অধিক পরিমাণে খাদ্য তালিকায় সংযুক্ত করতে হবে। 

প্রশ্ন; নিউমোনিয়া থেকে সুস্থ হতে কতদিন লাগে?
উত্তর: নিউমোনিয়া থেকে পুরোপুরি ভাবে সেরে উঠতে অন্তত ২/৩ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। 

প্রশ্ন: নিউমোনিয়া কি রাতে বেশি হয়?
উত্তর: সাধারণত রাতে পরিবেশের তাপমাত্রা কিছুটা কমে যায়। আর এ সময় শিশুদের নিউমোনিয়া আক্রান্ত হওয়ার হার অনেক বেশি থাকে। 

প্রশ্ন: নিউমোনিয়ার সবচেয়ে গুরুতর জটিলতা কি? 
উত্তর: নিউমোনিয়া রোগটি জটিল আকার ধারণ করলে শিশুদের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। কারণ নিউমোনিয়ার ফলে বিকলাঙ্গ, অঙ্গহানি এমনকি ফুসফুসের যাবতীয় টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মানুষ মৃত্যুর মুখে পতিত হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
এই পোস্টে কমেন্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

অনির্বাণ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url