চন্দন গাছ কোথায় পাওয়া যায় - চন্দন মুখে দিলে কি হয়

চন্দন গাছ কোথায় পাওয়া যায় এ বিষয়টি অনেকেই জানে না। চন্দন আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। চন্দন গাছ কোথায় পাওয়া যায়, এ ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই শোনা যায়। যেহেতু এটি অনেক চাহিদাসম্পন্ন একটি উপাদান তাই চন্দন গাছ কোথায় পাওয়া যায় এ বিষয়টি আমাদের অবশ্যই জেনে রাখা উচিত।
চন্দন গাছ কোথায় দেখতে পাওয়া যায়?

তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট চন্দন গাছ কোথায় পাওয়া যায় উক্ত বিষয়টি জেনে নেওয়া যাক। সুতরাং চন্দন গাছ বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায় এবং চন্দন মুখে দিলে কি হয় তা জেনে নেওয়ার জন্য সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে ফেলুন। 

সূচিপত্রঃ চন্দন গাছ কোথায় পাওয়া যায় - চন্দন গাছের উপকারিতা 

চন্দন মুখে দিলে কি হয় | চন্দন গাছের উপকারিতা 

যারা ত্বকের অতিরিক্ত যত্ন নিয়ে থাকে সাধারণত তারা জানে যে চন্দন গাছ ত্বকের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। চন্দনের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। সাধারণত এই উপাদানগুলোর কারণেই চন্দন গাছ এর চাহিদা এত বেশি। চন্দন গাছ সাধারণত সব জায়গাতে পাওয়া যায় না। এ কারণে চন্দন গাছ কোথায় পাওয়া যায়, এ ধরনের প্রশ্ন অনেকেই করে থাকে। তবে চলুন প্রথমে ত্বকে চন্দনের ব্যবহার গুলো এবার জেনে ফেলি। তাহলে আপনারা বুঝে যাবেন চন্দন মুখে দিলে কি হয়। 

আরো পড়ুনঃ বরই খেলে কি উপকার হয় - গর্ভাবস্থায় বরই খাওয়ার উপকারিতা

  • ব্রণের কালো দাগ দূর করতে
  • রোদে পোড়া দাগ দূর করতে
  • তৈলাক্ত ত্বক দূর করতে
  • ত্বকের বলিরেখা দূর করতে
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে

ব্রণের কালো দাগ দূর করতে - আমরা সকলেই কমবেশি ব্রণের সমস্যায় পড়ে থাকি। আপনি যদি অতিরিক্ত এই সমস্যায় ভুগে থাকেন এবং এখান থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে চন্দন গাছ ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষ করে চন্দন গাছের কাঠ আমাদের সব থেকে বেশি উপকারে আসে। নিয়মিত চন্দন ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করলে ব্রণ এবং ব্রণের কালো দাগ দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।

রোদে পোড়া দাগ দূর করতে - রোদে দীর্ঘ সময় কাজ করলে আমাদের ত্বকে রোদে পোড়া দাগ তৈরি হয়ে যায়। এই দাগ দূর করতে ফলপ্রসু ভূমিকা রাখে চন্দন। প্রথমে আপনাকে এক চামচ চন্দন গুড়া এরপরে শসার রস ও গোলাপজল নিয়ে একসাথে পেস্ট তৈরি করতে হবে। এই পেস্ট 20 মিনিটের জন্য ত্বকে রেখে দিতে হবে। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

তৈলাক্ত ত্বক দূর করতে - সাধারণত যাদের ত্বক অতিরিক্ত পরিমাণে তৈলাক্ত তাদের ত্বকে বেশি ব্রণের সমস্যা দেখা যায়। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদেরকে প্রথমে তৈলাক্ত ত্বক দূর করতে হবে। তৈলাক্ত ত্বক দূর করার অন্যতম একটি প্রধান উপায় হল চন্দন। তাই নিয়মিত চন্দনের ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন এবং তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তি লাভ করুন। 

ত্বকের বলিরেখা দূর করতে - চন্দনের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হলো এটি আমাদের মুখে থাকা বলে রেখা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। নিয়মিত যদি চন্দন আমাদের ত্বকে ব্যবহার করা যায় তাহলে এটি দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ত্বকের মধ্যে থাকা বিভিন্ন ধরনের বলিরেখা দূর করবে। এর জন্য আপনাকে চন্দন এর গুড়া এরপরে গোলাপজল এবং গ্লিসারিন মিশিয়ে ত্বকের ব্যবহার করতে হবে। চন্দন মুখে দিলে কি হয় তা নিশ্চয়ই এখন বুঝতে পারলেন। 

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে - আমরা সকলেই চাই আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাক। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হলো চন্দন। চন্দন নিয়মিত ব্যবহার করলে এটি আমাদের ত্বকের মধ্যে থাকা বিভিন্ন ধরনের দাগ তুলতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। সাধারণত ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার জন্য আপনাকে সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন চন্দন ব্যবহার করতে হবে। চন্দন গাছ কোথায় পাওয়া যায় তা জানার জন্য পোস্টের পরের অংশ দেখুন। 

সুতরাং ত্বকের যত্নে চন্দন গাছের উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা বিস্তর ধারণা লাভ করলেন। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে রূপচর্চায় চন্দনের ব্যবহার বহুলভাবে হয়ে থাকে। তবে আমাদের দেশের অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে চন্দনের গুঁড়ো কিনতে পাওয়া যায়। 

চন্দন গাছ কোথায় পাওয়া যায় | চন্দন গাছ কোথায় জন্মায় 

বাংলাদেশে তেমনভাবে চন্দন গাছ দেখতে পাওয়া যায় না। চন্দন প্রধানত আমাদের স্বাস্থ্যের এবং আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। চন্দন গাছ কোথায় পাওয়া যায় আমাদের দেশে এ ব্যাপারটি নিয়ে জানার আগ্রহের কমতি নেই। আপনাদের সুবিধার্থে বলে রাখি চট্টগ্রামে গড়ে তোলা হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম শ্বেত চন্দনের বাগান। বিস্তারিতভাবে চন্দন গাছ কোথায় পাওয়া যায় চলুন এবার তা জেনে নেওয়া যাক।

পৃথিবীর সবথেকে দামি গাছ হিসেবে বিবেচনা করা হয় চন্দন গাছকে। চন্দন গাছের চাহিদা সবথেকে বেশি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে। কারণ তারা দৈনন্দিন বিভিন্ন ধরনের পূজার কাজে চন্দন ব্যবহার করে থাকে। এ ছাড়া চন্দন গাছের অনেক ঔষধি গুন রয়েছে। আরো রয়েছে আমাদের ত্বকের জন্য বেশ কিছু উপকারী পুষ্টি উপাদান। লাল চন্দন গাছ কোথায় পাওয়া যায় এ প্রশ্নটিও অনেকে করে থাকেন। 

চন্দন গাছ সব থেকে বেশি দেখতে পাওয়া যায় আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে। এছাড়া চন্দন গাছ পৃথিবীর আরো অন্যান্য দেশে যেমন: আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া সহ আরো বেশি কিছু দেশে পৃথিবীর সবথেকে দামি গাছ দেখতে পাওয়া যায়। চন্দন গাছের চারা রোপনের সব থেকে উপযুক্ত সময় হলো জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত। এই সময় রোপন করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

আরো পড়ুনঃ কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম এবং হাদিস

চন্দন কাঠ আমাদের স্বাস্থ্য এবং ত্বকের জন্য অনেক বেশি উপকারী তাই এর চাহিদা অনেক বেশি। যারা চন্দন গাছের চাষ করে সাধারণত তারা অনেক বেশি লাভবান হয়। প্রাচীন কাল থেকে এখন পর্যন্ত চন্দন কাঠের চাহিদা রয়েছে। কারণ চন্দন কাঠ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সাবান, পাউডার, ক্রিম, টুথপেস্ট তৈরি করা হয়। বিশেষ করে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য ক্রিম তৈরিতে এটি ব্যবহার করা হয়।

এছাড়া আমাদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। চন্দনের মধ্যে রয়েছে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা এবং ব্রণের সমস্যা দূর করতে চমৎকার ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া চন্দন এর গুড়া খেলে এটি আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সুতরাং প্রধানত চন্দন গাছ কোথায় জন্মায় তা এই পোস্টটি থেকে আপনারা জেনে গেলেন। 

চন্দন গাছ চেনার উপায়

চন্দন গাছ কোথায় পাওয়া যায়, আপনি এ বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন। যেহেতু চন্দন গাছ আমাদের অনেক চাহিদা সম্পন্ন ও দামি  একটি গাছ, সেহেতু চন্দন গাছ চেনার উপায় সম্পর্কে আমাদের যথেষ্ট ধারণা থাকা দরকার। যদি আমরা চন্দন গাছ চেনার উপায় জেনে রাখতে পারি তাহলে খুব সহজে আমরা চন্দন গাছ এক নিমিষেই চিনে ফেলতে পারব। এতে করে চন্দন গাছের নামে কেউ প্রতারণা করতে চাইলে আমরা সহজে ধরে ফেলতে পারব। 

চন্দন গাছ ছোট থেকে মাঝারি ধরণের সুগন্ধি যুক্ত একটি বৃক্ষ। চন্দন গাছ সাধারণত ১৫-১৮ মিটার লম্বা হয়ে থাকে। চন্দন গাছের দুইটি প্রকারভেদ রয়েছে সেগুলো হলো শ্বেত ও রক্ত। এরমধ্যে রক্ত চন্দন গাছের ছাল কালো আভা যুক্ত ধূসর বর্ণের হয়ে থাকে। এই গাছের কাঠগুলো অনেক শক্ত বাইরের দিক থেকে সাদা কিন্তু ভেতরের দিক থেকে লাল বর্ণের হয়ে থাকে। এটিই শ্বেত চন্দন ও লাল চন্দন গাছ চেনার উপায় এর মধ্যে  মূল পার্থক্যের বিষয়। এ বিষয়টি অবশ্যই স্মরণে রাখবেন।

লাল চন্দন গাছ চেনার উপায় - লাল চন্দন গাছের ছবি

লাল চন্দন গাছের ছবি 

লাল চন্দন গাছ চেনার উপায় সম্পর্কে সকলেরই জানার আগ্রহ রয়েছে। কারণ লাল চন্দন গাছের দাম সবথেকে বেশি হয়ে থাকে। রক্ত চন্দন গাছের পাতার মাথা কিছুটা চাপা ও চামড়ার মত শক্ত ধরনের হয়ে থাক।  সাদা চন্দন গাছের মধ্যে সুগন্ধি থাকলেও লাল চন্দন গাছের মধ্যে কোন ধরনের সুগন্ধি পাওয়া যায় না। পৃথিবীতে যত দামি কাঠ রয়েছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো লাল চন্দন কাঠ। শ্বেত চন্দন গাছ চেনার জন্যও আপনারা এর পাতা ভালোভাবে লক্ষ্য করবেন। 

বাংলাদেশে চন্দন গাছের চারা কোথায় পাওয়া যায়? 

যেহেতু ত্বকের যত্ন ও ভেষজ চিকিৎসায় চন্দন গাছ খুবই দরকারী একটি উপাদান, তাই আমাদের দেশে চন্দন গাছ আমরা কোথায় পাবো এ ব্যাপারে না জানলেই নয়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রচুর পরিমাণে চন্দন গাছের চারা পাওয়া গেলেও আমাদের দেশে অত সহজে আপনি চন্দন গাছের চারা খুঁজে পাবেন না। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু অঞ্চলে স্বল্প পরিসরে চন্দন গাছ দেখা যায়। সে সকল গাছ থেকে কলমের মাধ্যমে আপনি চন্দন গাছের চারা সংগ্রহ করতে পারবেন। মনে রাখবেন চন্দন গাছ রোপন ও চারা সংগ্রহের সবচেয়ে আদর্শ সময় হল শীতকাল। বর্তমানে অনলাইন প্লাটফর্মেও চন্দন গাছের বীজ ও গুড়ো পাওয়া যায়। 

চন্দন গাছের চারার দাম কত

আমরা সাধারণত আমাদের ত্বকে ব্যবহার করার জন্য চন্দন গাছের দাম কত এ বিষয়গুলো জানতে চাই। কিন্তু সনাতন ধর্মাবলম্বীর মানুষেরা তাদের পূজার কাছে এবং কেউ মারা গেলে তাদের দাহ করার কাজে চন্দন গাছের কাঠ ব্যবহার করে থাকে। সাধারণত হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরাই চন্দন গাছের চারার দাম কত এ বিষয়টি সম্পর্কে জানতে অধিক আগ্রহী থাকে। চন্দন গাছের মধ্যে কয়েকটি প্রকারভেদ রয়েছে এগুলোর মধ্যে রক্ত বা লাল চন্দন হল অন্যতম। এর কার্যকারিতাও সব দিক থেকে অনেক বেশি। 

আরও পড়ুন: ছাদে বেদানা চাষ পদ্ধতি - টবে ডালিম চাষ পদ্ধতি

রক্ত বা লাল চন্দন গাছের দাম অন্যান্য চন্দন গাছের তুলনায় সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। এই লাল চন্দন প্রতি কেজি বিক্রি করা হয় প্রায় ১০ হাজার টাকা করে। এই দাম বেশি হতে পারে আবার কম হতে পারে। যদি গাছ মাঝারি আকারের হয় তাহলে একটা গাছ থেকে খুব সহজেই ১৫ থেকে ২০ কেজি পাতা পাওয়া যায়। অনলাইন মার্কেটপ্লেসে সুলভ মূল্যে লাল চন্দন গাছের বীজ আপনারা ক্রয় করতে পারবেন। শ্বেত চন্দন গাছের দাম লাল চন্দনের চেয়ে কিছুটা কম হয়ে থাকে। অতএব চন্দন গাছের দাম সম্পর্কে একটি আইডি আপনারা পেয়ে গেলেন। 

আমাদের শেষ কথাঃ চন্দন গাছ কোথায় পাওয়া যায় - চন্দন মুখে দিলে কি হয় 

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে আমাদের ত্বকের জন্য চন্দন গাছের উপকারিতা, চন্দন গাছ কোথায় পাওয়া যায়, চন্দন গাছ চেনার উপায়, চন্দন গাছের চারার দাম কত এ বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু চন্দন পৃথিবীর অন্যতম দামী একটি গাছ এবং এর মাধ্যমে বহু কাজ করা যায়, সেহেতু চন্দন গাছ সম্পর্কে এই পোস্টে আলোচিত প্রত্যেকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। চন্দন গাছ সম্পর্কে অধিক ধারণা দিতে এই পোস্টটি আপনাদের যথেষ্ট উপকারে আসবে বলে মনে করছি। চন্দন মুখে দিলে কি হয় তা অন্যদের জানাতে এই পোস্টটি সর্বত্র শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
এই পোস্টে কমেন্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

অনির্বাণ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url