ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা - কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে

 

কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে এ ব্যাপারে প্রত্যেক ব্যক্তির সম্যক ধারণা থাকা উচিত। ডায়াবেটিস রোগীদের সচেতনতার প্রধান বিষয় হলো প্রতিদিনকার খাবার। সেজন্য অবশ্যই ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা কিরূপ হওয়া উচিত তা জানতে হবে। আজকের আর্টিকেলে আমরা ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করব।
ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা - কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে

বর্তমানে আমাদের দেশে ডায়াবেটিস রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে। এর পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হলো ডায়াবেটিস রোগীদের কি খাবার খাওয়া দরকার সে ব্যাপারে সচেতন না থাকা। প্রতিদিনের খাবার সম্পর্কে উদাসীন থাকলে হুট করে ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার ব্যাপক ঝুঁকি থাকে। তাই স্বাস্থ্য সচেতনতার অংশ হিসেবে আজকের এই পোস্টে আমরা জানব কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে। সুতরাং ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য তালিকা সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ আইডিয়া পাওয়ার জন্য এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। 

পোস্ট সূচিপত্র - ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা - কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে

ডায়াবেটিস কি ও কেন হয়? 

এক গবেষণায় দেখা গেছে বর্তমানে সারা বিশ্বে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৫৫ কোটি। বাংলাদেশ সহ বিশ্বে প্রতি ৭ সেকেন্ডে অন্তত একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। ডায়াবেটিস মূলত এক ধরনের মেটাবলিক ডিজঅর্ডার যা শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন প্রক্রিয়া নষ্ট করে ফেলে। ফলে শর্করা ভেঙে রক্তে অতিরিক্ত সুগার জমা হয়। অগ্নাশয় থেকে নিঃসৃত ইনসুলিন চিনিগুলো থেকে শক্তি সঞ্চয় করে। কিন্তু ইনসুলিন উৎপাদন কমে গেলে শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। 

যার দরুন ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। জীবন যাপন পদ্ধতিতে অনিয়ম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ না করা ও বংশগত কারণে ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি থাকে। বিভিন্ন লক্ষণ দেখে আপনি ডায়াবেটিস রোগ চিহ্নিত করতে পারবেন। নিয়মমাফিক জীবন যাপন করাই ডায়াবেটিস প্রতিরোধের মূল মন্ত্র। কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে এ বিষয়টি আপনারা আজকের পোস্ট থেকে বিস্তারিত জানতে পারবেন। সেই সাথে ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা সম্পর্কেও অবগত হবেন।

কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে | কি খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে 

একবার ডায়াবেটিস আক্রান্ত হলে তা থেকে সুস্থ হওয়া অনেক কঠিন। তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন করলে খুব সহজে আপনি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। এজন্য প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিত সে সম্বন্ধে ব্যাপক ধারণা থাকা দরকার। তবে চলুন এবার জেনে নিই দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় অর্থাৎ কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে তার চমৎকার কিছু খাবার কৌশল সম্পর্কে। 

  • লেবু: ডায়াবেটিস হলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে অন্যতম নিয়ামকের ভূমিকার পালন করে লেবু। এমনকি ডায়াবেটিস প্রতিরোধে এটি ইনসুলিনের ন্যায় কাজ করতে পারে। সেজন্য প্রত্যেক দিনের খাবার তালিকায় লেবু, জাম্বুরা, কমলালেবু ইত্যাদি সংযুক্ত করতে পারেন। ডায়াবেটিস দ্রুত কমানোর ক্ষেত্রে এগুলো দারুণ উপকারী হবে। 
  • চীনাবাদাম ও কাঠবাদাম: ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ৩০ শতাংশ কমাতে পারে চীনা বাদাম। আর প্রত্যেক দিনের খাবারে কাজুবাদাম রাখলে সেটির ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিস্ময়কর অবদান রেখে থাকে। চেষ্টা করবেন প্রত্যেকদিন ১ আউন্স কাজুবাদাম বা আখরোট খেতে। একটি ডায়াবেটিস দ্রুত কমাতে সহায়তা করবে। 
  • মটরশুঁটি: ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপাদেয় একটি খাদ্য উপাদান হলো মটরশুটি। গবেষণা থেকে জানা যায় এক কাপ মটরশুঁটি সব ধরনের ডায়াবেটিস প্রতিরোধে প্রহরীর মত কাজ করে। এতে চর্বিবিহীন প্রোটিন, শর্করা ও আঁশ বেশি পরিমাণে রয়েছে। যা রক্তে চিনির পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। 
  • মাছ: মাছের অভ্যন্তরে থাকা ওমেগা-৩-ফ্যাটি এসিড দারুণভাবে ইনসুলিন সংবেদনশীলতাকে উদ্দীপ্ত করতে পারে। একই সাথে এটি রক্তে গ্লুকোজের ঘনত্ব যেমন কমায়, তেমনি শক্তি জোগাতেও ভূমিকা রাখে। চর্বিহীব প্রোটিনের আধারও মাছ। সেজন্য ডায়াবেটিস দ্রুত কমাতে ও নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য খাদ্যাভাসে বেশি পরিমাণে মাছ রাখার চেষ্টা করুন। 
  • ভিটামিন সি যুক্ত ফল: ভিটামিন সি এর অভাব হলে দেখে খুব সহজে ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই যে সকল ফলে অধিক পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, সেই সমস্ত ফল ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যেমন: পেয়ারা, লেবু, বাদামী জামির, আম।
  • গ্রিন টি: আপনি হয়তো ভাবছেন চা খেলেও কি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে? হ্যাঁ বন্ধুরা ঠিকই শুনেছেন গ্রিন টি নিয়মিত খেলে আপনি নিমিষেই ডায়াবেটিসের মাত্রা কমিয়ে আনতে পারবেন। দ্রুত ডায়াবেটিস কমানোর জন্য গ্রিন টি একটি ভালো পানীয়। 
  • ডিমের সাদা অংশ: ডিমের সাদা অংশে অনেক উচ্চমাত্রায় চর্বিহীন প্রোটিন ও কম মাত্রায় শর্করা বিদ্যমান থাকে। ফলে এটি আক্রান্ত ব্যক্তির ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। ডাক্তাররা প্রায়ই ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের ডিমের সাদা অংশ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। 
  • টক দই: টক দইয়ে অনেক অল্প পরিমাণে মিষ্টি থাকে। এটি রক্তে চিনির পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। এজন্য টক দই ডায়াবেটিস দ্রত কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী একটি খাবার হতে পারে। বিকালে হালকা নাস্তার পাশাপাশি টক দই খেলে আপনার ডায়াবেটিস কমে যাবে। 

বন্ধুরা পোস্ট এর এই অংশ থেকে আপনারা কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানলেন। আপনাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য আমরা পোস্টের পরবর্তী অংশে ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকা সম্পর্কে বিস্তর ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা | ডায়াবেটিস রোগীর খাবার চার্ট pdf

বন্ধুরা আপনারা যেভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখবেন এবং কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে সেজন্য কি কি খাবার খেতে হবে সে সম্বন্ধে ইতোমধ্যে ধারণা পেয়েছেন। এবার আমরা প্রতিবেলায় ডায়াবেটিস রোগীদের আদর্শ খাবার তালিকা কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়টি তুলে ধরব। আশা করি এই চার্ট অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করলে আপনারা খুব সহজেই ডায়াবেটিসের মত প্রাণঘাতী ব্যাধি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। চলুন পোস্টের এই অংশ থেকে ধারণা নিয়ে ফেলি ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা কি রকম হওয়া উচিত। 

ডায়াবেটিস রোগীর সকালের খাবার তালিকা:

সকাল বেলা কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে এবার তার একটি চার্ট আপনাদের সামনে পয়েন্ট আকারে তুলে ধরলাম। মনে রাখবেন সকালের নাস্তায় ক্যালোরি সমৃদ্ধ এবং চিনি কম রয়েছে এমন খাবার নির্বাচন করতে হবে। এ সম্বন্ধে ডাক্তার জাহাঙ্গীর কবির বিশেষ কিছু টিপস দিয়েছেন। আগে চলুন ডায়াবেটিস রোগীর সকালের খাবার তালিকা কেমন হওয়া উচিত তা দেখে ফেলি। 

  • দুধ 
  • পি নাট 
  • সূর্যমুখীর বীজ 
  • পাউরুটি 
  • চিনি ছাড়া চা 
  • ছানা 
  • পনির 
  • মাখন ঘি
  • তেল ছাড়া রুটি/পরোটা ইত্যাদি 

ডায়াবেটিস রোগীর দুপুরের খাবার তালিকা:

কি খেলে ডায়াবেটিস হবে না এটি অনেকেই জানতে চান। যে সকল খাবার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে সেসব খাবারই দুপুরের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মনে রাখবেন অধিক তেল চর্বি জাতীয় খাবার আপনার ডায়াবেটিসে মাত্রাকে বাড়িয়ে দিতে পারে। সেজন্য শাকসবজি জাতীয় এবং পুষ্টিকর খাবার খাদ্য তালিকায় বেশি পরিমাণে রাখতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকার এ অংশে দুপুরের খাবারগুলো দেখে নিন। 
  • লাল চালের ভাত 
  • নুডুলস 
  • পান্তা 
  • মিষ্টি আলু 
  • তৈলাক্ত মাছ 
  • বীজ 
  • ডাল 
  • শিম
  • বরবটি
  • সেদ্ধ ডিম/ভাজি
  • শসা 
  • গাজর 
  • পাস্তা 
  • টক দই 
  • হালকা তেলের মাংস ইত্যাদি 

ডায়াবেটিস রোগীর দুপুরের খাবার তালিকা:

ডায়াবেটিস রোগীর রাতের খাবারগুলোও অনেকটা দুপুরের খাবারের অনুরূপ হতে পারে। কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে এমন সব খাবার সম্পর্কে আপনার পূর্ণাঙ্গ ধারণা থাকতে হবে। আপনাদের সুবিধার্থে এখানে আমরা রাতের বেলা ডায়াবেটিস রোগীর কি কি খাবার খেতে হবে তার একটি তালিকা উপস্থাপন করলাম। এক নজরে ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকার রাতের খাবার গুলো দেখে নিন। 

  • রুটি 
  • স্যুপ 
  • তেল যুক্ত মাছ 
  • ডাল
  • ভাত
  • সবজি
  • সালাদ
  • বেগুন
  • পটল
  • আখরোট
  • বাদাম
  • লেবুর রস
  • শীমের বিচি
  • পাতলা মাখন
  • পাউরুটি ইত্যাদি 

আরও পড়ুন: চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা - চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

সুতরাং আপনারা ডায়াবেটিস হলে প্রত্যেক বেলার খাবার তালিকায় কোন ধরনের খাবারগুলো রাখবেন তা জেনে ফেললেন। আপনার বয়স ও শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক এ সকল খাবার গ্রহণ করলে দ্রুতই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। তাছাড়াও আপনারা চাইলে ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকা ডাঃ জাহাঙ্গীর কবির স্যারের পরামর্শ অনুযায়ী সিলেক্ট করতে পারেন। উনি দীর্ঘ গবেষণার ফলশ্রুতিতে ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যাভ্যাস সংক্রান্ত বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা ও  কার্যকরী সমাধান দিয়েছেন। অতএব আপনারা ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা সম্পর্কে দারুন আইডিয়া পেয়ে গেলেন।

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা 

সঠিক খাদ্য অভ্যাস মেনে না চলার কারণেই ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।  তাই কি কি খাবার খেলে ডায়াবেটিস বাড়ে, এ ব্যাপারে যথাসম্ভব সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আপনারা ইতোমধ্যে কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনেছেন। এবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কোন কোন খাবার এড়িয়ে চলা উচিত তা জেনে রাখুন। 

  • লবণ: ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়াবেটিস বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে বড় শত্রু হল এই কাঁচা লবণ। আপনি ফলমূল ও শাক সবজির মাধ্যমে যতটুকু লবণ গ্রহণ করেন তাই স্বাস্থ্যের জন্য যথেষ্ট। তাই অতিরিক্ত লবন খাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। 
  • চিনি: চিনি ক্যালসিয়াম ও কার্বোহাইড্রেট ছাড়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী তেমন কোন উপাদান প্রোভাইড করে না। বরং চিনি বেশি খেলে ডায়াবেটিসের মাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। তাই চিনি বর্জন করে, প্রাকৃতিকভাবে চিনি রয়েছে এমন খাবার গ্রহণ করুন যেমন: গুড়, আখ, মধু।
  • তেল চর্বি: তেল চর্বি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন তবে অধিক তেল চর্বি রক্তের সুগারের মাত্রা বৃদ্ধি করে।  সেজন্য আপনার তেলে ভাজা খাবার পরিহার করতে হবে। অধিকন্ত লাল মাংস খাওয়া যথা সম্ভব কমাতে হবে। যেমন: গরু, খাসি। সেজন্য নিরামিষ খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং সপ্তাহে দুই-তিন দিন মাছ খেতে পারেন।
  • চা কফি: চা কফি বেশি মাত্রায় পান করা ও ডায়াবেটিস বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। সেজন্য চিনি ছাড়া চা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। প্রয়োজনে আয়ুর্বেদ চা খান। 
  • দুগ্ধজাত দ্রব্য ও ময়দা: দুগ্ধ জাতীয় যে সকল খাবার রয়েছে তা অনিয়ন্ত্রিতভাবে খেলে শরীরে হাই ফ্যাট জমা হতে পারে। ফলশ্রুতিতে ডায়াবেটিস সৃষ্টি হওয়াও অস্বাভাবিক কিছু নয়। সেজন্য কম পরিমাণে ঢুকতে জাতীয় খাবার খান এবং ময়দার বদলে আটা বা ভাত খেতে পারেন।

ডায়াবেটিস হলে কোন খাবার ভালো হবে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য তা জেনে নিতে হলে পোষ্টের পূর্ববর্তী অংশ পুনরায় পড়ে দেখতে পারেন। কেননা সেখানে আমরা বিস্তারিতভাবে কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে এবং ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা সম্বন্ধে বিশদ ধারণা দিয়েছি। সেখান থেকে আপনি দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় জেনে যাবেন। 

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা ফল ও সবজি | ডায়াবেটিস প্রতিরোধে করণীয় 

ডায়াবেটিস হলে কি কি সবজি খাওয়া যাবেনা এ ব্যাপারে অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন। বিখ্যাত ব্রিটিশ চিকিৎসক ডাঃ ডেবোরাহ বলেন যে সমস্ত সবজি মাটির ওপরে ফলে তা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আদর্শ। যেমন: বাঁধাকপি, ব্রকলি, পালংশাক ইত্যাদি। এছাড়াও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মাশরুম, মটরশুটি, ছোলা, কচুর লতি, পেঁয়াজ, ঢেঁড়স, ফুলকপি, শসা, চিচিঙ্গা, লাউ, ডাটা, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি সবজিগুলো অধিক উপকারী। তবে অত্যাধিক কার্বোহাইড্রেট যুক্ত বিট, শালগম, মিষ্টি আলু না খাওয়াই ভাল।

আরও পড়ুন: কোন শাক খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে

ডায়াবেটিস প্রতিরোধের জন্য বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি যুক্ত ফল খেতে হবে। তবে ডায়াবেটিস হলে কি কি ফল খাওয়া যাবে তার মধ্যে অন্যতম হলো পেয়ারা, কমলালেবু, আপেল, পেপে, তরমুজ ইত্যাদি। এসব ফলে ফ্যাট ও সোডিয়াম কম থাকে এবং ফাইবার ও ভিটামিন সি অধিক পরিমাণে থাকে, যা ডায়াবেটিস প্রতিরোধে দারুন উপকারী। তবে আম, কলা আঙ্গুর, সফেদা ইত্যাদি ফলগুলোতে গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স বেশি থাকায় তা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। সেজন্য ডায়াবেটিস রোগীদের এসব বিপদজনক ফল খেতে না দেয়াই উত্তম।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় ও করণীয়:

  • প্রত্যেকদিন অন্তত আধাঘন্টা হাঁটুন। 
  • প্রত্যেক বেলা সময় মত খাবার গ্রহণ করুন। 
  • ফাস্টফুড ও কোমল পানীয় পরিহার করুন। 
  • অতিরিক্ত তেল চর্বি জাতীয় জাঙ্ক ফুড খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিন। 
  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। 
  • ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় শাকসবজি ও ফলমূল বেশি পরিমাণে রাখুন। 
  • একটানা কোন কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। হালকা ব্যায়াম করুন। 
  • নিয়মিত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে পুষ্টিযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। 
  • অ্যালকোহল ও ধূমপান চিরতরে পরিত্যাগ করুন। 
এ সকল নিয়ম মেনে জীবনযাপন করলে ডায়াবেটিস অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। আর কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন থাকুন। মনে রাখবেন যথাযথ স্বাস্থ্য সচেতনতাই পারে ডায়াবেটিস থেকে আমাদের রক্ষা করতে। সেই সাথে ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা পুঙ্খানুপুঙ্কে অনুসরণ করুন। 

শেষ মন্তব্য - কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে - ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা

বন্ধুরা আজকে আমাদের এই পোষ্টের মূল উদ্দেশ্য ছিল ডায়াবেটিস রোগীদের তাদের খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপারে যথাসম্ভব সচেতন করা। সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকলে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে। একই সাথে ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা প্রতিবেলায় কেমন হওয়া উচিত সে সম্বন্ধেও পূর্ণাঙ্গ একটি ধারণা লাভ করতে পেরেছেন। ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় করার ক্ষেত্রে এই পোস্টে উল্লেখিত সকল তথ্যই আপনাদের উপকারে আসবে বলে মনে করছি। ধন্যবাদ। 

FAQs (ডায়াবেটিস সংক্রান্ত জিজ্ঞাসা) 

প্রশ্ন: ডায়াবেটিস রোগীর জন্য কি ধরনের খাবার খাওয়া উচিত?
উত্তর: ডায়াবেটিস রোগীদের সব সময় উচ্চ ক্যালরি সমৃদ্ধ ভিটামিন সি ও ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। যেসব খাবার খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে তার মধ্যে থেকে আপনাকে প্রতিদিন বেছে বেছে খাবার খেতে হবে। 

প্রশ্ন: খাওয়ার পর কি সুগার বেড়ে যায়? 
উত্তর: যে কোন খাবার খেলে আমাদের দেহে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। আর শর্করা দেহের মধ্যে ভাঙতে শুরু করলে সেখান থেকে চিনি নির্গত হয়। তাই খাওয়ার পরে সুগার বেড়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক। 

প্রশ্ন: ডায়াবেটিকস এর স্বাভাবিক মাত্রা কত?
উত্তর: খালি পেটে ডায়াবেটিসের মাত্রা ৫.৫ থাকা অনেক ভালো। তবে ৫.৫ এর চেয়ে বেড়ে গেলে আপনাকে খাদ্যাভ্যাসের সচেতন হতে হবে। 

প্রশ্ন: খাওয়ার পর ভরা পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল?
উত্তর: খাবার পরে ভরা পেটে ডায়াবেটিসের মাত্রা ৮ পয়েন্টের নিচে হলে সেটিকে স্বাভাবিক বা নরমাল ধরা যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিসের মাত্রা ৮ এর বেশি হলে সেটি অবশ্যই চিন্তনীয় বিষয়।

প্রশ্ন: ডায়াবেটিস কি বংশগত রোগ?
উত্তর: টাইপ-১ ডায়াবেটিস বংশগত কারণেই আক্রান্ত হয়ে থাকে। ডায়াবেটিসের এ ধরনে অগ্নাশয়ের সংক্রমণে কিছুতেই ইনসুলিন উৎপন্ন হয় না। যেকোনো বয়সেই ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
এই পোস্টে কমেন্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

অনির্বাণ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url